কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানাল, যদি সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা না হয়ে থাকে, তবে শুধু ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত নন, প্রায় ১২ হাজার প্রশিক্ষিত প্রার্থীর নিয়োগও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চ এই পর্যবেক্ষণ করেন।
আরও পড়ুন: অযোগ্যদের তালিকায় এবার BJP নেতার স্ত্রীর নাম, ষড়যন্ত্রের অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রায় ৩২ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করেছিলেন। রাজ্য সরকার সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই ডিভিশন বেঞ্চে যায়। বর্তমানে মোট ১৪০টি রিট পিটিশনের একত্রে শুনানি হচ্ছে। অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবী কুমার জ্যোতি তিওয়ারি ও সৌম্য মজুমদার আদালতে দাবি করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, সম্পূর্ণ দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা ধরে নিতে পারি যে প্রশিক্ষিত এবং অপ্রশিক্ষিত উভয়ের জন্যই একটি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল। যদি কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা না হয়, তাহলে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের জন্যও কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এখন যদি আদালত ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল করা হয়, তাহলে বাকি প্রশিক্ষিত ১২,০০০ প্রার্থীকে কি ছেড়ে দেওয়া হবে? কারণ তারা তো একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ। তাদেরও তো তাহলে মামলায় যুক্ত করে বক্তব্য শোনা দরকার।
বিচারপতি চক্রবর্তী আরও মন্তব্য করেন যে, প্রার্থীরা সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা এখনও প্রমাণিত নয়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘সিবিআই এবং ইডি তদন্ত চলছে। কেউ জানেন না কখন এটি শেষ হবে। আমিও জানি না কখন এটি শেষ হবে। তাই শুধু সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পরে এবং জালিয়াতির প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করার পরেই আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে এই ব্যক্তিদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা এতে নিযুক্ত ছিলেন।’
এই মন্তব্যে স্পষ্ট যে আদালত এখনই কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাইছে না। বরং সিবিআই ও ইডির তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই মূল অপরাধীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত রায় দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।