শিক্ষক নিয়োগকাণ্ডে প্রকাশিত অযোগ্যদের তালিকা ঘিরে ফের তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। দাগীদের তালিকায় একাধিক তৃণমূল নেতা এবং তাঁদের আত্মীয়র নাম উঠে এসেছে। এবার সেই তালিকায় উঠে এল বিজেপির এক নেতার স্ত্রী'র নাম। বীরভূমের রামপুরহাটের ঘটনায় কার্যত নতুন মোড় নিল পুরো বিতর্ক। ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিজেপি নেতা।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকা দিল SSC, রয়েছে ধোঁয়াশা? লিস্টে কত নাম?
স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশিত তালিকায় ৬৫৩ নম্বরে নাম রয়েছে লক্ষ্মী বিশ্বাসের। তিনি রামপুরহাটের কুশুম্বা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। লক্ষ্মী বিশ্বাস হলেন বিজেপির বীরভূম জেলা সাংগঠনিক কমিটির কোষাধ্যক্ষ সুরজিৎ সরকারের স্ত্রী। তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশ্যে আসতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর থেকে রামপুরহাটে তাঁদের বাড়িতে গিয়েও লক্ষ্মী বিশ্বাস বা সুরজিৎ সরকারের দেখা পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তাঁরা কলকাতায় রয়েছেন বলে খবর। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে, পরিকল্পিতভাবে এই নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুরজিৎ সরকার নিজেও সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে।
তৃণমূল শিবির অবশ্য এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। দলের জেলার শীর্ষ নেতা অনুব্রত মণ্ডল সংক্ষিপ্তভাবে বলেছেন, বিষয়টি রাজ্য দেখবে। অন্যদিকে, রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এ বিষয়ে কোনও তথ্য নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন। বিজেপির দাবি, লক্ষ্মী বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন এবং অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তাঁকে অযোগ্য তালিকায় ফেলা অনৈতিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বীরভূম জেলা সাংগঠনিক সভাপতি ধ্রুব সাহা অভিযোগ করেছেন, এটা নিছকই এক বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। বিজেপিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। লক্ষ্মীর নাম ওই তালিকায় থাকা উচিতই নয়। তাই তাঁর স্বামী আইনি পথে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এতদিন পর্যন্ত এই তালিকায় তৃণমূল নেতা বা তাঁদের ঘনিষ্ঠদের নাম উঠে আসছিল। এবার বিজেপি নেতার পরিবারের নাম ওঠায় নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ফলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যজুড়ে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।