'ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা প্রসারিত করতে জার্মানির উপর নির্ভর করে নয়া দিল্লি।' এমনটাই জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। বুধবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন বিদেশমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এবং জার্মানির বিদেশমন্ত্রী জোহান ডেভিড ওয়াডেফুল। ইন্দো-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি যখন ঝুলে আছে, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে দিয়ে দ্রুত ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে মরিয়া নয়াদিল্লি।
বিদেশমন্ত্রী জোহান ডেভিড ওয়াডেফুলের এই সফর ভারত-জার্মানি কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপনের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ। জোহান ওয়াডেফুল মঙ্গলবার সকালে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছান এবং সেখানে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা পরিদর্শন করেন।এরপর তিনি নয়া দিল্লিতে এসে পৌঁছান এবং বুধবার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকের পর বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এই বৈঠকের মূল বিষয় ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সবুজ শক্তি, ডিজিটাল রূপান্তর এবং বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থা। এছাড়াও, ভারত ও জার্মানির মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার জন্য প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং দক্ষ শ্রমশক্তি নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন-২০২৫ সালের আগে এলেই হবে! ৩ দেশের সংখ্যালঘুদের বড় ছাড় CAA সংশোধনীতে, কাদের লাভ?
এই বৈঠকে ভারত ও জার্মানির মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। জার্মানির বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'ভারত এই শতাব্দীর আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা স্বাভাবিক অংশীদার। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে আমাদের একসঙ্গে নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা রক্ষা করতে হবে।' এই বক্তব্য ভারত ও জার্মানির মধ্যে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত সহযোগিতার প্রতিফলন ঘটায়। অন্যদিকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা ত্বরান্বিত করতে জার্মানির সমর্থনের উপর নির্ভর করে নয়া দিল্লি। তাঁর কথায়, 'ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং এফটিএ আলোচনা ত্বরান্বিত করতে আমরা আপনার সমর্থনের উপর নির্ভর করছি। ভারত এবং জার্মানির বহুপাক্ষিক সহযোগিতার একটি মজবুত ইতিহাস রয়েছে। আমি নিশ্চিত, আজ আমাদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে তা আরও এগিয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন-২০২৫ সালের আগে এলেই হবে! ৩ দেশের সংখ্যালঘুদের বড় ছাড় CAA সংশোধনীতে, কাদের লাভ?
এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত ও জার্মানি তাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। বিশেষ করে, বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন দেশের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে, ভারত ও জার্মানির এই সহযোগিতা বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।