প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মাথাচারা দিয়ে উঠেছে সাইবার জালিয়াতরা। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ব্যপকভাবে বৃ্দ্ধি পেয়ছে সাইবার স্ক্যামের হার ৷ এবার ঘটনাস্থল নয়ডা। এক ৭৬ বছর বয়সি বৃদ্ধার সঙ্গে প্রতারণা করে ৪৩ লক্ষ টাকার বেশি হাতিয়ে নিল প্রতারকরা। আর এই ঘটনায় প্রতারকরা হাতিয়ার করেছে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলাকে।
আরও পড়ুন-ক্রুদের সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডা মদ্যপ যাত্রীর! দিল্লিতে বিপাকে পড়ল কলকাতাগামী IndiGo
নয়ডায় ওই বৃদ্ধারকে সাইবার জালিয়াতরা পুলিশ সেজে ভয় দেখিয়ে প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, নয়ডার সেক্টর ৪১-এর বাসিন্দা সরলা দেবীর ফোনে এক ব্যক্তি যোগাযোগ করেন। নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে জানান, সরলা দেবীর নাম, ফোন নম্বর ও পরিচয়পত্র ব্যবহার করে মুম্বইয়ে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেই সব অ্যাকাউন্ট থেকে হাওলা, জুয়া এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য টাকা লেনদেন হয়েছে। এমনকী জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার ক্ষেত্রেও তাঁর নম্বর ব্যবহার হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এখানেই শেষ নয়, প্রতারকরা সরলা দেবীকে জানান, তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জামানত হিসেবে টাকা জমা দিতে হবে, পরে ফেরত দেওয়া হবে। এই ফাঁদেই পা দেন ওই বৃদ্ধা।
আরও পড়ুন-ক্রুদের সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডা মদ্যপ যাত্রীর! দিল্লিতে বিপাকে পড়ল কলকাতাগামী IndiGo
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২০ জুলাই থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে সরলা দেবীকে একাধিক কিউআর কোড পাঠায় প্রতারকরা। এরপরেই ওই বৃদ্ধা আট দফায় মোট ৪৩.৭ লক্ষ টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠান। এরমধ্যে কখনও ৭০ হাজার, কখনও ১১ লক্ষ টাকার মতো বড় অঙ্কের লেনদেন হয়েছে। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, টাকা পাঠানো হয়েছিল ‘বরিন্দর পাল সিং’, ‘মদন কুমার’, ‘মঞ্জু জেনারেল স্টোর’ এবং ‘আশাপুরা টি স্টল’-এর নামে খোলা অ্যাকাউন্টে।এক পর্যায়ে সরলা দেবীকে ১৫ লক্ষ টাকা দিতে চাপ দেয় প্রতারকরা। এমনকী গ্রেফতারির ভয়ও দেখানো হয়। কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তিনি আইনজীবীর পরামর্শ নেন এবং বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তৎক্ষণাৎ টাকা পাঠানো বন্ধ করে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।এরপরেই নয়ডা পুলিশের সাইবার ক্রাইম শাখা ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বৃদ্ধার দাবি, তাঁর সঞ্চয়ের টাকা যেন ফেরত আনা হয় এবং অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। সম্প্রতি প্রবীণ নাগরিকরা প্রযুক্তি সম্পর্কে কম অভিজ্ঞ হওয়ায় এই ধরনের ডিজিটাল প্রতারণায় বারবার টার্গেট হচ্ছেন।