জনস্বার্থকে মামলা রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সম্প্রতি এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মতুয়াদের সার্টিফিকেট নিয়ে একটি বিশেষ মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ জানাল বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের কথায়, ওই মামলাকারীদের মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। জনস্বার্থ মামলার উদ্দেশ্য গরিব ও বঞ্চিতদের সুবিচার দেওয়া। তাই রাজনৈতিক স্বার্থে এর ব্যবহার ঠিক নয় বলে মন্তব্য করে আদালত।
কী দাবি অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংঘের?
অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংঘের তরফে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তাদের দাবি, বেআইনি পদ্ধতিতে ভুয়ো তপশিলি জাতি ও জনজাতির শংসাপত্র বিলি করা হচ্ছে। গত ১৫ বছর ধরে বহু অসাধু ব্যক্তি এই শংসাপত্র পেয়েছেন। অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংঘের বক্তব্য, এই সার্টিফিকেটগুলি বাতিল করা হোক। পাশাপাশি কারা এই সার্টিফিকেট বিলির চক্রে জড়িত রয়েছে, তা খুঁজে বার করা হোক। তার জন্য সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিক হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন - কেন বন্ধ ছাত্রভোট? রাজ্য কলেজের ঘাড়ে দায় চাপাতেই প্রমাণের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট
কী বলল রাজ্য?
রাজ্যের তরফে এই দিন আদালতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কোনও জাল বা ভুয়ো শংসাপত্র বিলি করা হয়ে থাকলে তা পুনরায় যাচাইয়ের মাধ্যমে বাতিল করতে পারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আইন মেনেই তা সম্ভব। কল্যাণ বলেন, মামলাকারীরা এই বিষয়ে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।
শিক্ষকদেরও ভুয়ো শংসাপত্র
ভুয়ো শংসাপত্র কিছু শিক্ষককেও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংঘের। তেমনই এক শিক্ষক পীযুষ সাহা এদিন উপস্থিত ছিলেন আদালতে। তার তরফে আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি, আইনি পথে এর সমাধান সম্ভব। তাহলে কেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের মামলা গ্রহণ করা হবে আদালতে?
আরও পড়ুন - পুলিশের সমালোচনা মানেই সমাজবিরোধী, বিতর্কিত মন্তব্য মেয়র ফিরহাদ হাকিমের
কী পর্যবেক্ষণ দিল আদালত?
অল ইন্ডিয়া মতুয়া সংঘের দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, সাধারণ মানুষের অধিকারের কথা ভেবেই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি মামলা করলেই তা বাতিল হওয়া উচিত নয়। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, অভিযোগ জানানোর পর সরকারি আধিকারিকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় দিতে হবে। আপাতত তাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।