ঝাড়গ্রামে ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে চাঞ্চল্যকর ছবি। হাতির পাল তাড়াতে তাক করে ছোড়া হচ্ছে একের পর এক আগুনের গোলা। ২৯ অগস্টের রাতের সেই ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিয়োর সত্যতা এখনই যাচাই করা না হলেও, তা ভাইরাল হওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে বন দফতর। সোমবার রাতে বনবিভাগ এই ঘটনায় চারজনকে চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।
আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে বাড়ছে হাতির তাণ্ডব, সংঘাত ঠেকাতে বৈঠকে বন দফতর, বহু পরিকল্পনায় জোর
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেদিন রাতে রূপনারায়ণ বনবিভাগের আমলাগোড়া রেঞ্জের গনগনি এলাকায় (গড়বেতা থানা) ২৫টি হাতির একটি দলকে খেদিয়ে বাঁকুড়ার জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। বনকর্মীরা এবং প্রশিক্ষিত হুলা পার্টির সদস্যরা মিলে পুরো তাড়ানোর কাজ করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় হাতির দিকে তাক করেই একের পর এক জ্বলন্ত আগুনের গোলা ছোড়া হয়। আতঙ্কে হাতিরা ছুটতে শুরু করে এবং করুণ চিৎকার করে ওঠে। নির্মম দৃশ্যের সামনে দাঁড়িয়েও কেউ তা থামানোর উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। বনকর্মীদের দাবি, তাঁদের সঙ্গে উপস্থিত কিছু গ্রামবাসীই আগুনের গোলা ছুড়ছিলেন। তবে পাল্টা অভিযোগও উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, আসলে হুলা পার্টির কিছু সদস্যই এই কাজ করেছেন। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মাঝেই ঘটনাটি সামনে আসায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে হাতি তাড়ানোর নাম করে এই ধরনের নিষ্ঠুরতা কেন ঘটছে।
রূপনারায়ণ বনবিভাগের ডিএফও শিবানন্দ রাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে ২৯ অগস্ট রাতে গনগনি এলাকাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বন্য প্রেমী এবং গবেষকদের ক্ষোভ প্রবল। বন্যপ্রাণী গবেষক রাকেশ সিং দেব বলেন, এটা অত্যন্ত নিষ্ঠুর কাজ। হাতি আর মানুষের মধ্যে সংঘাত যে দিন দিন বাড়ছে, সেটা স্পষ্ট। বন দফতরকে কড়া পদক্ষেপ করতেই হবে, যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। উল্লেখ্য, এর আগেও একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। গত ১১ জুন ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল বিটের হাড়িভাঙ্গা এলাকায় হাতির পালকে তাড়াতে ঠিক একইভাবে আগুনের গোলা ছোড়া হয়েছিল। সেবারও সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর নড়েচড়ে বসে বন দফতর। বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় এবার স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।