জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর দীঘায় পর্যটকদের ঢল যেন থামছেই না। সৈকত শহরের হোটেল, লজ ও রাস্তাঘাট প্রতিদিনই উপচে পড়ছে দর্শনার্থীতে। এই ভিড়ে যাতে পর্যটকদের ভোগান্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে এবার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। চালু করা হল একটি নতুন ‘ট্যুরিস্ট গাইড বুক’, যাতে থাকবে রকমারি সুবিধা ও দরকারি তথ্য।
আরও পড়ুন: দিঘায় জগন্নাথ মন্দির দর্শনের পথে বেলদায় ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা, প্রাণ হারালেন ৪ জন
রবিবার দিঘার একটি লজের সম্মেলন কক্ষে সংগঠনের ৩৪তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এই গাইডবুক প্রকাশিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা-ব্যক্তিরা, প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। শুধু গাইডবুক প্রকাশই নয়, এই সভায় দীঘা-শঙ্করপুর অঞ্চলের হোটেল ও লজগুলির নানা সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। গাইডবুকটিতে রয়েছে দিঘা ও আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলির পূর্ণ বিবরণ। কীভাবে পৌঁছতে হবে তার দিকনির্দেশ, পাশাপাশি সমস্ত হোটেলের ঘরভাড়া, ফোন নম্বর ও ছবিও দেওয়া হয়েছে। পর্যটকরা সরাসরি এই নম্বরগুলিতে ফোন করে নিজেদের থাকার ব্যবস্থা পাকা করে নিতে পারবেন। কোনও দালাল বা তৃতীয় পক্ষ ছাড়াই। এই ব্যবস্থায় ভাড়া সংক্রান্ত জালিয়াতি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রবণতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্ট মহল।
সম্প্রতি একাধিক পর্যটকের অভিযোগ ছিল, দীঘার কিছু হোটেল ও লজ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ নিচ্ছে। এমনকি সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে ক্ষোভও প্রকাশ পেয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে ডিএসডিএ (দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা) হোটেলগুলিকে নির্দিষ্ট ভাড়ার তালিকা বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি, বিধানসভার ক্রেতা সুরক্ষা সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটিও এলাকায় গিয়ে হোটেল সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে এবং কালোবাজারি রুখতে কড়া বার্তা দেয়। গাইডবুকে এমনকি জানানো হয়েছে, যদি কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে, তবে পর্যটক কীভাবে এবং কোথায় অভিযোগ জানাতে পারবেন তার স্পষ্ট নির্দেশনা। হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র জানান, এই গাইডবুক প্রকাশের মূল উদ্দেশ্য, পর্যটকদের সুবিধা করে দেওয়া। এতে তাঁরা যেমন নির্বিঘ্নে ঘুরে দেখতে পারবেন, তেমনি আমাদের সদস্যরাও স্বচ্ছভাবে পরিচালনার দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।’