নির্বাচনী তালিকা সংশোধনের কাজে দায়িত্বে থাকা বুথ-স্তরের অফিসার বা বিএলও নিয়োগে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলায় নিয়মভঙ্গ করে প্রায় ২০০০টিরও বেশি বুথে বিএলও হিসেবে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ হয়েছে। যদিও সেসব বুথে স্থায়ী রাজ্য সরকারি কর্মচারী তথা গ্রুপ-সি স্তরের কর্মকর্তারা আইসির মানদণ্ড পূরণ করায় তাদেরই নিয়োগ করা উচিত ছিল। অভিযোগের তীব্রতা বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রত্যেক অভিযোগ খতিয়ে দ্রুত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: SIR হচ্ছে বাংলায়, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন
ইসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় বিএলও-রাই কমিশনের ‘চোখ ও কান’ মতো ভূমিকা পালন করেন। বাড়ি বাড়ি ঘরে গিয়ে তালিকা যাচাই, মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটার চিহ্নিতকরণ, নতুন নাম অন্তর্ভুক্তির অনুরোধের যাচাই এসবই বিএলও-র কাজ। তাই বিএলও নিয়োগে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা ইসির কাছে গুরুতর মনে হচ্ছে। আগামী মাসে রাজ্যে সম্ভাব্য ওএসআইআর পরিচালনাকে সামনে রেখে ইসির এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, যেখানে সরকারি কর্মী থাকা সত্ত্বেও সেখানে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে এমন বিষয়ে জেলার প্রতিটি অভিযোগ আলাদাভাবে খতিয়ে দেখে দ্রুত রিপোর্ট কমিশনের কাছে পাঠাতে হবে।
ইসির আগে নির্দেশ ছিল, বিএলও নিয়োগে প্রধানত রাজ্য সরকারের গ্রুপ-সি এবং তার উপরের স্তরের স্থায়ী কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরই বেছে নেওয়া হবে। যদি কোনও বুথে এ ধরনের যোগ্য কর্মচারী না পাওয়া যায়, তবেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী বা রাজ্য সরকারের চুক্তিভিত্তিক কর্মী গ্রহণ করা যাবে। এছাড়া, এ ধরনের অনাবশ্যক নিয়োগের জন্য প্রধান নির্বাচন অফিসারের পূর্বানুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। সূত্রের খবর, অভিযোগগুলোর মধ্যে অনুমোদনহীন নিয়োগের ঘটনা ধরা পড়েছে। নির্বাচন কমিশনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, অতীতে বহুবার দেখা গেছে কিছু বিএলও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। ফলত কাল্পনিক ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত বা মৃত, স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম মুছে না দেওয়ার মতো অনিয়ম ঘটেছে।
এদিকে, কিছু শিক্ষক বিএলও হিসেবে নিয়োগপত্র গ্রহণ না করায় পশ্চিমবঙ্গের সিইও মনোজ আগরওয়াল স্কুল শিক্ষা বিভাগের প্রধান সচিবকে চিঠি লেখেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্য-সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলোর শিক্ষকরা দ্রুত যেন বিএলও ডিউটিতে যোগদান করেন। না হলে শোকজ নোটিশসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।