কলকাতার পুজো মানেই আলো, ভিড় আর জমজমাট আয়োজন। তার মধ্যেই আলাদা নজর কাড়ে সোনার গয়নায় সাজানো প্রতিমা। উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহরের নামকরা ১৩টি পুজো মণ্ডপে দেবীকে সোনার অলঙ্কারে সাজানো হয়। লাখো ভক্তের ভিড় জমে এসব মণ্ডপে, কিন্তু এত সোনা-রুপোর সাজসজ্জা নিয়ে চিন্তাও কম নয়। কারণ, নজর রাখতে পারে দুষ্কৃতীরাও। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে এখন পাহারায় লালবাজার।
আরও পড়ুন:'পুলিশ অক্লান্ত ভাবে…', মহাসপ্তমীর সকালে প্রশাসনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ পরমব্রত!
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ১৩টির মধ্যে ১১টি মণ্ডপে নিযুক্ত করা হয়েছে দু’জন করে রাইফেলধারী পুলিশকর্মী। তাঁদের দায়িত্ব প্রতিমার গয়নার উপর কড়া নজর রাখা। বাকি দু’টি মণ্ডপে নিরাপত্তার বলয় আরও শক্ত। যেমন, মুচিপাড়া এলাকার এক পুজো মণ্ডপে থাকছেন দু’জন রাইফেলধারী কনস্টেবল ও দু’জন সার্ভিস পিস্তলধারী অফিসার। আর বেনিয়াপুকুরের এক মণ্ডপেও একইভাবে সশস্ত্র পাহারায় প্রতিমার গয়না সুরক্ষিত রাখা হচ্ছে। পুজো কমিটিগুলি সাধারণত নিজেদের দিক থেকেও সোনা পাহারার ব্যবস্থা রাখে। গয়নার হিসাব রাখা থেকে শুরু করে বিসর্জনের আগে সেগুলি খুলে নেওয়া সবই কমিটির তত্ত্বাবধানে হয়। তবে এত ভিড়ের মধ্যে ঝুঁকি এড়াতে পুলিশের সহায়তাই সবচেয়ে বড় ভরসা। লালবাজারের নির্দেশে এই সব মণ্ডপেই বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, যাতে প্রতিমার কাছাকাছি কেউ সন্দেহজনকভাবে পৌঁছতে না পারে।
অনেক জায়গায় প্রতিমাকে অল্প সময়ের জন্য গয়না পরানো হলেও, যতক্ষণ মায়ের গায়ে থাকে এই সোনার অলঙ্কার, ততক্ষণ সেখানে থাকেন সশস্ত্র পুলিশকর্মীরা। তাঁদের নজর শুধু গয়নার দিকেই নয়, দর্শনার্থীর ভিড়েও সমানভাবে। কেউ যেন অতিরিক্ত কাছে গিয়ে ভিড়ের সুযোগ নিতে না পারে, সেই বিষয়েও কড়া নির্দেশ রয়েছে। অর্থাৎ, পুজোর আলো-আড়ম্বরের আড়ালে এখন সোনার সাজে মণ্ডপগুলির নিরাপত্তার দায়িত্ব পুরোপুরি লালবাজারের হাতে। শহরের এই ‘সোনার’ দুর্গাপুজোগুলি তাই শুধু ভক্তদের নয়, পুলিশেরও সমানভাবে নজরের কেন্দ্রবিন্দু।