২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে দুর্গাপুজোকে হাতিয়ার করতে কোমর বেঁধে নেমেছে সিপিএম। পুজোর ভিড়কে সামনে রেখে কলকাতায় ১১৯টি বুকস্টল খুলেছে আলিমুদ্দিন। সারা রাজ্যে স্টলের সংখ্যা ছুঁতে চলেছে প্রায় দু’হাজার। লক্ষ্য একটাই, আসন্ন নির্বাচনের আগে আমজনতার কাছে পৌঁছনো।
আরও পড়ুন: পুজোয় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গে,দুর্যোগ ঠেকাতে নজরদারি মমতার
জানা যাচ্ছে, এ বছর বুকস্টলে রাখা হয়েছে ১২ থেকে ১৩ রকম নতুন বই। দলের মতাদর্শভিত্তিক বইয়ের পাশাপাশি ঠাঁই পেয়েছে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাটক, প্রবন্ধ ও কবিতা। জায়গা হয়েছে প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির লেখারও। শুধু রাজনীতি নয়, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গুরুত্ব, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি তুলে ধরার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ন্যাশনাল বুক এজেন্সি এবং একাধিক প্রকাশনা সংস্থা থেকে প্রকাশিত রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, দর্শন, জীবনী, অনুবাদ, সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, শিশু ও কিশোর সাহিত্য সবকিছুরই মিশ্রণ মিলছে স্টলগুলিতে। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়েও আলাদা বই রয়েছে। কলকাতা জেলা সিপিএম সম্পাদক কল্লোল মজুমদার জানিয়েছেন, এবার কলকাতায় ১১৯টি স্টল হয়েছে। যাদবপুর, বাগবাজার, নেতাজিনগর-সহ কয়েকটি এলাকায় বড় মাপের স্টল দেওয়া হয়েছে।প্রবীণ নেতা রবীন দেব মনে করছেন, গোটা রাজ্যে স্টলের সংখ্যা দু’হাজারের কাছাকাছি হবে।
স্টল জমজমাট রাখতে পার্টির কর্মী, সমর্থকদের কাছে বিশেষ বার্তা গিয়েছে। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ডিউটির দায়িত্ব বণ্টন হয়েছে। নির্দেশ স্পষ্ট, বুকস্টল ফাঁকা রাখা যাবে না, ভিড় টানতেই হবে। তবে বাস্তব ছবিটা মিশ্র। দল ক্ষমতায় থাকাকালীন বুকস্টলে ভিড় ছিল উপচে পড়া। ঠাকুর দেখার ফাঁকে মার্কসবাদী সাহিত্য ঘাঁটতে আসতেন অনেকে। কিন্তু ২০১১-র পর থেকে সেই উচ্ছ্বাস অনেকটাই ম্লান। অনেক জায়গায় শালুতে মোড়া স্টল থাকলেও ক্রেতাশূন্য অবস্থায় পড়ে থাকে। কোথাও কোথাও কমরেডরা প্রথম দিন হাজির হলেও রাত নামতেই স্টল ফাঁকা হয়ে যায়। তবু যাদবপুর এইট-বি বা বাগবাজারের মতো কিছু এলাকায় এখনও ভিড় টানছে বুকস্টল। সেই হিসেব দেখিয়ে নেতারা দাবি করছেন, পুজোয় বই বিক্রি মানেই জনসমর্থনের ইঙ্গিত। তবে ভোটের বাক্সে তার প্রতিফলন আদৌ মিলবে কি না, সেই উত্তর সময়ই দেবে।