সপ্তমীর রাতেই ফের রাজনৈতিক তরজা ঘনীভূত হল। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সপরিবারে হাজির হলেন দুর্গাপুরের শংকরপুর সর্বজনীন দুর্গাপুজোর মণ্ডপে। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের আদলে গড়া এই পুজো মণ্ডপে ঘুরে দেখে তিনি প্রকাশ্যে জানালেন, তিনি এখানে শুধুই প্রতিমা আর মণ্ডপ দর্শনে এসেছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কী সম্পর্ক থাকতে পারে? কিন্তু তাঁর এই বক্তব্যেই আরও জোরালো হয়ে উঠল বিতর্ক।
আরও পড়ুন: ‘মন্ত্রী না হতে পারার হতাশায় দিলীপ ঘোষকে কুকথা বলছেন চরিত্রহীন সৌমিত্র খাঁ’
জানা যাচ্ছে, এই শংকরপুর পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। উদ্যোক্তাদের নেতৃত্বেও রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই মণ্ডপেই বিজেপি সাংসদের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে রাজনৈতিক মহলে। পুজো কমিটির সভাপতি ও দুর্গাপুর-ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি স্বাধীন ঘোষ অবশ্য বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখছেন। তাঁর কথায়, পুজো কারও একার নয়। মা দুর্গা সবার। মণ্ডপে যে-ই আসুক, সকলকে স্বাগত জানানো হয়। তবে সাংসদকে তিনি অনুরোধ করেছেন, তিনি যেন দিঘায় গিয়ে জগন্নাথ মন্দিরও দেখে আসুন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার শিল্প ও ধর্মকে একসঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এবারে সেই একই আবহ ফের উঠে এল সৌমিত্র খাঁকে ঘিরে। রাজনৈতিক ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, সৌমিত্র খাঁ-র রাজনৈতিক যাত্রাপথও কম নাটকীয় নয়। ২০১১ সালে কংগ্রেসের হয়ে কোতুলপুর বিধানসভা আসনে লড়েছিলেন তিনি। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ২০১৪ সালে বিষ্ণুপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। কিন্তু বিজেপিতে নাম লেখানোর পরই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। বর্তমানে তিনি বিজেপির হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত। তাই সপ্তমীর রাতে দিঘার জগন্নাথধামের আদলে তৈরি শংকরপুর মণ্ডপে তাঁর উপস্থিতি নিছক দুর্গাদর্শন, নাকি এর পেছনে অন্য রাজনৈতিক তাৎপর্য লুকিয়ে আছে সেই নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা।