লাদাখে অশান্তি এবং প্রাণহানির ঘটনার তিন দিনের মাথায় গ্রেফতার হন ইঞ্জিনিয়র, গবেষক তথা সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুক। এরপরেই লাদাখ পুলিশের ডিজি এসডি সিং জামওয়ালের একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়। ওই ভিডিওতে লাদাখ পুলিশের ডিজি বলতে শোনা গেছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ-এ রাজ্যের দাবিতে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠার পর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ কোনও প্রমাণ ছাড়াই লাদাখের সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আর এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই সত্যতা যাচাই করল প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো।
ওই ভিডিওটিকে 'ডিপফেক অ্যালার্ট' হিসেবে শনাক্ত করে পিআইবি ফ্যাক্ট চেক ইউনিট বলেছে, 'লাদাখ পুলিশের ডিজি এসডি সিংয়ের ডিজিটালভাবে পরিবর্তিত একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। যেখানে তিনি দাবি করছেন যে কোনও প্রমাণ ছাড়াই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে সোনম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করা হয়েছে । কিন্তু লাদাখের ডিজি এমন কোনও বিবৃতি দেননি।' সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও লেখা হয়েছে, 'জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে শেয়ার করা এই ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর ভিডিও থেকে সাবধান থাকুন। সতর্ক থাকুন! শেয়ার করার আগে সর্বদা কন্টেন্ট যাচাই করুন এবং ভুল তথ্যের বিস্তার রোধে সহায়তা করুন। এই ধরনের বিভ্রান্তিকর কন্টেন্ট আমাদের +৯১-৮৭৯৯৭১১২৫৯ (ফোন) / factcheck@pib.gov.in (ইমেল)-এ রিপোর্ট করুন।'
সোনম ওয়াংচুকের স্ত্রী
পাকিস্তান সফর নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে ‘পাকিস্তান লিঙ্ক’ এর অভিযোগ খারিজ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন সফরের উদাহরণ দিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সোনাম ওয়াংচুকের স্ত্রী গিতাঞ্জলি জে. অ্যাঙ্গমো। তিনি বলেন, 'আমরা ইউএন-এর আমন্ত্রণে পাকিস্তানে পরিবেশ সম্মেলনে গিয়েছিলাম, 'মোদীজীও চিনে গিয়েছেন, তাহলে তাঁকে কেন কখনও প্রশ্ন করা হয় না?' তিনি আরও বলেন, 'সোনাম পাকিস্তানে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রসংঘ-সমর্থিত একটি কনফারেন্স যোগ দিতে। হিমালয় অঞ্চলের সকল দেশেই এতে অংশ নিয়েছিলেন। জলবায়ু পরিবর্তন এবং হিমবাহের সমস্যা সীমান্ত দেখে না। পাকিস্তান বা ভারত বন্যা হলে সাধারণ মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়।' তিনি স্পষ্ট করেছেন, ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ পাকিস্তানের ‘ব্রিথ পাকিস্তান’ সম্মেলনে সোনাম ওয়াংচুক প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিমারী বিমোচন, কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উদ্যোগের প্রশংসা করেছিলেন-যা একটি ভিডিও ক্লিপে রেকর্ড করা আছে।
সোনম ওয়াংচুকের আন্দোলনের ইতিহাস ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে লাদাখকে ইউনিয়ন টেরিটরি করে আলাদা করার পর শুরু হয়। এতে ল্যান্ড রাইটস এবং ট্রাইবাল এরিয়ার সুরক্ষা প্রভাবিত হয়েছে। ওয়াংচুক, যিনি ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির অনুপ্রেরণা এবং নভোএল-পুরস্কার বিজয়ী, গান্ধীয় উপায়ে অনশন করে দাবি তুলছেন। গিতাঞ্জলি বলেছেন, 'চার বছর ধরে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো আমাদের এনজিও সেকমল এবং এইচআইএএল-কে টার্গেট করছে।তারা বলেছে, অনশন বন্ধ না করলে এফসিআরএ লাইসেন্স ক্লিয়ার হবে না।' তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকারি সংস্থাগুলি (সিবিআই, আইবি, আইটি) প্রমাণ না পেয়ে এখন মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে পাকিস্তান লিঙ্ক, টাকা তছরুপ যাতে ওয়াংচুকের কণ্ঠস্বর দমন করা যায়।