দিল্লির শ্রী শারদা ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেন্ট-রিসার্চে অন্তত ১৭ জন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পুলিশের হেফাজতে স্বঘোষিত ধর্মগুরু স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী। আর তারপর থেকেই তাঁর একাধিক কুকীর্তির কথা প্রকাশ্যে আসছে। গ্রেফতার হওয়ার পর দিল্লির আশ্রমের 'বাবা'- র ফোন থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে মহিলাদের সঙ্গে চ্যাট করার একাধিক প্রমাণ।ওইসব চ্যাটে মেয়েদের বিভিন্ন টোপ ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলোভন দেখানোর চেষ্টা করতেন চৈতন্যনন্দ। এর থেকেই তাঁর মনোভাব সম্পর্কে আভাস পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন-স্বস্তির বার্তা ভারতীয়দের! H-1B ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত ট্রাম্প সহযোগীর
পুলিশ সূত্রে খবর, চৈতন্যানন্দ ওরফে পার্থসারথীর ফোনে দেখা গিয়েছে, অনেক মহিলা ক্রু মেম্বারদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, বহু মহিলার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল পিকচারের স্ক্রিনশটও রয়েছে তাঁর মোবাইলে। ফলে স্পষ্ট, মহিলাদের বিভিন্ন ভাবে নিশানা করতেন স্বামী চৈতন্যনন্দ। ইতিমধ্যেই দিল্লির 'বাবা'- র দুই মহিলা সহকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্বামী চৈতন্যনন্দের মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের জেরা করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, স্বামী চৈতন্যনন্দ কোনও সহযোগিতা করছেন না। এমনকী জিজ্ঞাসাবাদের সময় মিথ্যে কথাও বলছেন। শুধু তাই নয়, একমাত্র অকাট্য প্রমাণের চাপ দিলে তবে প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন তিনি। পুলিশ আরও দাবি করেছে যে নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনও অনুতাপ, অনুশোচনা নেই ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরুর। তাঁর বিরুদ্ধে ভিজিটিং কার্ড এবং পাসপোর্ট জাল করার মতো বেশ কয়েকটি জালিয়াতিমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তাঁর কাছ থেকে দুটি জাল ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন-স্বস্তির বার্তা ভারতীয়দের! H-1B ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত ট্রাম্প সহযোগীর
দিল্লির অভিজাত এলাকা বসন্ত কুঞ্জ। সেখানে রয়েছে ম্যানেজমেন্ট পড়ার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানকারই ডিরেক্টর পদে আসীন ছিলেন স্বামী চৈতন্যনন্দ। আর সেই ইনস্টিটিউটের ১৭ জন ছাত্রী চৈতন্যানন্দের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও অশ্লীল ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ এনেছিলেন। কখনও ‘বেবি’, আবার কখনও ‘আই লভ ইউ’, বা কখনও ‘আই অ্যাডোর ইউ’- ছাত্রীদেরকে এই ধরণের মেসেজ পাঠাতেন স্বঘোষিত ‘বাবা’ স্বামী চৈতন্যানন্দ সরস্বতী। মূল ঘটনার সূত্রপাত ৩১ জুলাই। ইনস্টিটিউটের ম্যানেজমেন্টকে একটি চিঠি পাঠান প্রাক্তনী। যেখানে চৈতন্যানন্দের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরা হয়। পরের দিন এ বিষয়ে এয়ার ফোর্সের ডিরেক্টরেটের গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার অফিসার ইনস্টিটিউটকে ইমেল করেন। কারণ, অনেক শিক্ষার্থী এয়ার ফোর্স পরিবারের। অভিযোগের পর ইনস্টিটিউট পুলিশে এফআইআর দায়ের করে এবং চৈতন্যানন্দের পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি বাতিল করে নতুন ১১ সদস্যের গভর্নিং কাউন্সিল গঠন করে। সেই খবর তার কানে যেতেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন স্বামী চৈতন্যানন্দ। ৫০ দিন ধরে পলাতক থাকার পর গত রবিবার আগ্রার একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল স্বামী চৈতন্যনন্দকে।