লাদাখ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করেন, গত সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় লাদাখের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন মোদী। নিহতদের মধ্যে ভারতের হয়ে যুদ্ধ করা সেওয়াং থারচিনও ছিলেন। এই আবহে রাহুল বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি, আপনি লাদাখের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তারা তাদের অধিকারের দাবি জানাচ্ছে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন - হিংসা ও ভয়ের রাজনীতি বন্ধ করুন।'
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেখানে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের নেতৃত্বাধীন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট ছিলেন না আন্দোলনকারীদের একাংশ। এই আবহে সোনম ওয়াংচুক গত ১০ সেপ্টেম্বর অনশন ধর্মঘট শুরু করেছিলেন। তিনি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে আনার দাবিও তুলেছেন। ভারত সরকার এই একই ইস্যুতে লেহ (এবিএল) এবং কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ)-এর সাথে সক্রিয়ভাবে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। অক্টোবরে পরবর্তী বৈঠকও হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই ২৪ সেপ্টেম্বর হিংসাত্মক আকার ধারণ করে এই আন্দোলন। তাতে প্রাণ হারান ৪ জন। ৩০ জন পুলিশকর্মী এবং সিআরপিএফ জওয়ান সহ জখম অন্তত ৭০ জন। এদিকে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়েছে লেহ-তে অবস্থিত বিজেপি পার্টি অফিস।
রিপোর্টে জানানো হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সোনমের অনশন ধর্মঘটের স্থান থেকে বিপুল সংখ্যক আন্দোলনকারী গিয়ে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালিয়েছিল। সোনমের এতে ইন্ধন ছিল। লেহ-র সরকারি প্রধানের অফিসেও হামলা চালানো হয়। তবে সকালের হিংসাত্মক ঘটনার পর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। এদিকে কেন্দ্রের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, 'তাঁর উস্কানিমূলক বক্তব্যের জেরে এতকিছু হলেও সোনম ওয়াংচুক নিজে এর মাঝে অনশন ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিজের গ্রামে ফিরে যান। তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কোনও চেষ্টাই করেননি।' এদিকে লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নর কবিন্দর গুপ্তা এই ঘটনায় হিংসা ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর হিংসায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে সোনম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করা হয় এবং তাঁকে আপাতত যোধপুরের জেলে রাখা হয়েছে।