পুকুরে মরা মাছ ভাসছিল। এটা দেখে সেগুলি তুলতে যায় তিনজন শিশু। আর সেইসব মরা মাছ তুলতে গিয়ে গ্রামের পুকুরে তলিয়ে গেল তারা। একসঙ্গে তিনজন শিশু পুকুরের জলে ডুবে মারা গেল। আজ, সোমবার এই মর্মান্তিক ঘটনায় তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বীরভূমের নলহাটি থানার বারা গ্রামে। এই দুর্ঘটনার খবর শুনে গ্রামে আসেন প্রশাসনিক কর্তারা। তিন শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রথমে এই তিনজন শিশুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে পুকুরে ভেসে উঠতেই শোকস্তব্ধ পরিবেশ তৈরি হয়।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, বেলা ১২টা নাগাদ বীরভূমের নলহাটিতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুদের মধ্যে দু’জন মেয়ে, একজন ছেলে। তাদের নাম নাসরিন খাতুন (৪), নুরানি খাতুন (৫) এবং তামিম শেখ (৮)। স্থানীয় ওই জলাশয়ে শিশুদের দেহ ভেসে উঠতে দেখা যায়। আর তা দেখেই খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ এসে দেহ তিনটি উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠালে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্ত এখানেই করা হবে। উওর টারহাট পাড়ার দিঘির পাশে বুঢাতলা পুকুরে জলে মরা মাছ ভাসতে দেখা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিএড পড়ুয়ার সংখ্যা হ্রাস মারাত্মক হারে, ৭ হাজার আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে কলেজ গুলিতে
অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই পুকুরের ধারে আজ বেলায় যায় চার শিশু। মরা মাছ দেখে সেগুলি ধরার পরিকল্পনা করে তারা। তিন শিশু পুকুরের কাছে যায়। তিনজনেই পা পিছলে ওই পুকুরে পড়ে যায়। কিন্তু এই তিনজনের কেউ সাঁতার জানত না। ফলে পুকুরের জলে তারা ডুবে যায়। পাড়ে দাঁড়িয়ে ছিল অন্য একটি শিশু। সে এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে যায় আর দ্রুত গ্রামের বড়দের খবর দিতে ছুটে যায়। তার কথা শুনে গ্রামের লোকজন পুকুরের ধারে ছুটে আসে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। শিশুদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি। নলহাটি থানার পুলিশ এবং নলহাটি–২ ব্লক প্রশাসনের কর্তারা হাজির হন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
আরও পড়ুন: বিএড পড়ুয়ার সংখ্যা হ্রাস মারাত্মক হারে, ৭ হাজার আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে কলেজ গুলিতে
এছাড়া শিশু তামিম মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার বোখরা গ্রামের বাসিন্দা। কদিন আগে ওই গ্রামে তার দিদার বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে এসেছিল। আজকের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গোটা এলাকায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামে পৌঁছন নলহাটি ২ ব্লকের বিডিও রজতরঞ্জন দাস–সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। নলহাটি থানার লোহাপুর ফাঁড়ির পুলিশও গ্রামে গিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত করছে। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।