বিএড কলেজগুলিতে ভর্তির হার আশানুরূপ নয়। কিছু পড়ুয়া ভর্তি হচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু নানা কারণে তাঁরা আবার ছেড়েও দিচ্ছেন। অর্থাৎ বিএড পড়ার সেই চাহিদা আর নেই। ছাত্রাবাসগুলি কার্যত ফাঁকা পড়ে রয়েছে। যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের তুলনায় ২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষে, চলতি শিক্ষাবর্ষে বাংলার বিএড কলেজ গুলিতে এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গিয়েছে বিএড পড়ুয়ার সংখ্যা। যা নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন সকলে। চলতি শিক্ষাবর্ষে বাংলাজুড়ে ৬০০টিরও বেশি বিএড কলেজে প্রায় ৭ হাজার আসন ফাঁকা রয়ে গিয়েছে বলে খবর।
এই ফাঁকা আসন রয়েছে কেন? শিক্ষক–শিক্ষিকা কি কেউ হতে চাইছেন না? কেন কমে যাচ্ছে আগ্রহ? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘একদিকে সময় বেশি। অপরদিকে মোটা অঙ্কের টাকা জমা দিতে হয়। তাই বিএড পড়ার জন্য মধ্যবিত্ত পরিবারের পড়ুয়ারা অন্তত সেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে মনে হচ্ছে। তার উপর বিএড করলেই কর্মসংস্থান বাঁধা, এমন কোনও নিশ্চয়তা এখনও পর্যন্ত পড়ুয়ারা পাননি। তাই সম্ভবত দু’বছর ধরে বিএড পাঠ্যক্রমে ভর্তির ব্যাপারে উৎসাহী হচ্ছেন না।’
বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলাজুড়ে বিএড পড়ার জন্য মোট আসন সংখ্যা ৫৫ হাজার ১৫০টি। আর তার মধ্যে প্রায় ৪৮ হাজার পড়ুয়া রেজিস্ট্রেশন করেছে বিএড পড়ার জন্য। অথচ আগের বছর বিএড ভর্তির হার ছিল প্রায় ৯৮ শতাংশ। এবারের রেজিস্ট্রেশন করার সেই সংখ্যা এক ধাক্কায় কমে গেল প্রায় ১০ শতাংশ। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, যোগ্য–অযোগ্য বলে যেভাবে সুপ্রিম কোর্ট এত শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করেছে তাতে এই প্রভাব পড়েছে। আর যদি সব ঠিক হয়ে যায়, মিটে যায় তাহলে ইতিবাচক বার্তা যাবে। তখন আবার বিএড পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে বলে খবর।
এই সংখ্যা কমার পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, বহু বিএড পড়ার জন্য ভর্তি হয়ে রেজিস্ট্রেশন করলেন না। এই অনীহার কারণ জানা যায়নি। বাংলায় গত কয়েক বছর ধরে উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ নেই। তাই কি এবারের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শেষে এত আসন ফাঁকা? প্রশ্ন উঠছে। তার উপর চাকরিহারাদের কথা জানতে পেরে অনেকে আর এগিয়ে আসেননি বলেও মনে করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষা নিয়ে তাই সকলে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এটা চলতে থাকলে আগামী দিনে বড় সমস্যা দেখা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।