ক্রিকেটার থেকে ধারাভাষ্যকার হয়ে ওঠা সুনীল গাভাসকর, আরসিবি-র জয়ের পর বেঙ্গালুরুতে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনার প্রসঙ্গে শোকপ্রকাশ করেছেন। সেই ঘটনায় ১১ জন প্রাণ হারান এবং বহু মানুষ আহত হন। তবে, গাভাসকর আরসিবি-র দুর্দান্ত পারফরম্যান্সেরও প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে তাদের সবকটি অ্যাওয়ে ম্যাচে জয়, যার মধ্যে রয়েছে ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে হারানোও।
স্পোর্টসকিডায় প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে গাভাসকর তাঁর Mid-Day কলামে (রবিবার, ৮ জুন) লিখেছেন, ‘যদি আরসিবি তাদের প্রথম দিকেই ট্রফি জিতে ফেলত, তবে এমন উচ্ছ্বাস হয়তো দেখা যেত না। অন্যান্য দলও জিতেছে, কিন্তু তাদের উদযাপন এমন উন্মাদ নয়, হয়তো কারণ তাদের সমর্থকদের এতদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ‘ঈ সালা কাপ নামদে’ স্লোগানটি যেন দলের গলায় ভারী পাথরের মতো ঝুলছিল। এবার, যখন সে স্লোগান প্রায় শোনা যায়নি, তখন দল অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে, বেশিরভাগটাই নিজের মাঠের বাইরে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘তারা প্রতিটি অ্যাওয়ে ম্যাচ জিতেছে, যা আইপিএল-এ এক নতুন রেকর্ড। তাই ঘরের মাঠের সমর্থকেরা বিশেষ অভিবাদন জানাতে চেয়েছিলেন। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য আন্তরিক সমবেদনা। সমর্থকদের প্রার্থনায় ভাগ্য বদলে যায়, আর এ বছর সেই প্রার্থনাই দলকে বহু প্রতীক্ষিত কাপ এনে দিয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কী ভয়ঙ্কর ঘটনা! চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদদলনের ফলে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। তারা শুধু তাদের প্রিয় খেলোয়াড়দের একঝলক দেখতে চেয়েছিল, যারা গত দুই মাসে তাদের এত আনন্দ দিয়েছে। যে আইপিএল ট্রফির স্বপ্ন তারা এতদিন ধরে দেখছিল, তা এবার তাদের শহরে এসেছে। এটা স্বাভাবিক যে, তাদের আনন্দ আর ধরে রাখার মতো ছিল না। তারা হয়তো খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দেখতে চেয়েছিল, একটা ছবি তুলতে চেয়েছিল, একবার ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিল। আমরা সবাই তো কোনো না কোনো সময় কারোর ফ্যান থেকেছি, এখনো আছি, এবং চাই একটা ছবি, একটু হাত মেলানো!’
‘সর্বোত্তম মান নির্ধারণে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি ভালো’ — তরুণ প্রতিভা নিয়ে অসন্তুষ্ট গাভাসকর
সেই একই কলামে গাভাসকর আইপিএল ২০২৫-এ তরুণ প্রতিভাদের পারফরম্যান্সে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, রাজ্য ভিত্তিক টি-২০ লিগের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে নিলাম করা ভুল; বরং সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি অনেক বেশি প্রতিযোগিতাপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য।
তিনি লিখেছেন, ‘এই বছর আবারও প্রমাণ হল, শুধুমাত্র রাজ্য ভিত্তিক টি-২০ লিগের পারফরম্যান্স দেখে দল গঠন করাটা সঠিক নয়। বরং সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে কার কী পারফরম্যান্স ছিল, সেটাই বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। কারণ ওই ম্যাচগুলো অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। আর অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্ট দেখে অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাওয়া উচিত নয়, কারণ সেখানে প্রতিযোগিতার মান অনেক নীচু।’
তিনি আরও লেখেন, ‘যখন রান বা উইকেট এসেছে, সেটাও দেখতে হবে। কেবল পরিসংখ্যান দিয়ে বিচার করলে চলবে না। ৫ বলে ১৫ রান করলে স্ট্রাইক রেট হয়তো ৩০০, কিন্তু ওই সময় হয়তো দলের প্রয়োজন ছিল ১৫ বল খেলে ৪০ রান করা। প্রথম বলেই ছক্কা মেরে পরের বলেই আউট হওয়া, তা হয়তো গড় স্ট্রাইক রেট বাড়ায়, কিন্তু দলকে সাহায্য করে না। রাজ্য টি-২০ লিগের অনেক ছক্কা মারকরা আইপিএল-এ একেবারে ব্যর্থ হয়েছে।’
পরবর্তী অ্যাকশন এখন ইংল্যান্ডে, যেখানে ভারতের ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে ২০ জুন, লিডসে। ভারতের নেতৃত্বে এবার থাকবেন শুভমান গিল, এবং এই সিরিজ দিয়েই শুরু হবে ২০২৫–২৭ ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ।