Team India's shameful record: তিন ব্যাটারের শতরান সত্ত্বেও কোনও দল ৫০০ রান পেরোতে পারল না—এমনই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটল ভারতের সঙ্গে শনিবার। একসময় মনে হচ্ছিল, ভারত অনায়াসে ৫০০-র গণ্ডি পার করবে। যশস্বী জসওয়াল, শুভমন গিল ও ঋষভ পন্ত শতরান করলেও ভারত ৪৩০/৩ থেকে গুটিয়ে যায় ৪৭১-তে। শেষ সাতটি উইকেট পড়ে মাত্র ৪১ রানে। টেস্ট ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ স্কোর, যেখানে কোনও দল তিন উইকেট হারিয়ে ৪৩০ রানে পৌঁছে যাওয়ার পরও ৫০০ পেরোতে পারেনি। একইসঙ্গে, এটি এমন সর্বনিম্ন অলআউট স্কোর, যেখানে দলের তিন ব্যাটার শতরান করেছেন।
তিন শতরান সত্ত্বেও সর্বনিম্ন অলআউট ইনিংস
৪৭১ – ভারত বনাম ইংল্যান্ড, হেডিংলি, ২০২৫
৪৭৫ – দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড, সেঞ্চুরিয়ন, ২০১৬
৪৯৪ – অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড, হেডিংলি, ১৯২৪
৪৯৭ – ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারত, কলকাতা, ২০০২
পেসার জোশ টাঙ্গের দাপটে ইংল্যান্ডের বোলাররা ভারতের ইনিংস ধসিয়ে দেন। তিনি ৮৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতকে দ্বিতীয় দিনে ৪৭১ রানে অলআউট করেন। একসময় ৪৩০/৩ স্কোর দেখে মনে হচ্ছিল ভারত ৫০০ তো নয়, ৬০০-ও পার করতে পারে, কারণ গিল ও পন্ত তখনও ব্যাট করছিলেন। কিন্তু তারপরই ভয়াবহ ধস নামে।
ভারতের পক্ষে এটা হতাশাজনক হবে, কারণ শীর্ষ পাঁচে তিন ব্যাটার শতরান করলেও দল ৫০০ রানে পৌঁছাতে পারেনি। তাই তারা চাইবে এই দুর্দান্ত বোলিং কন্ডিশনে নিজেদের শক্তিশালী পেস আক্রমণ, বিশেষ করে বুমরাহকে কাজে লাগিয়ে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলতে।
ভারতের জন্য ইতিবাচক দিক হল—আবহাওয়া তখন কিছুটা মেঘলা ছিল এবং হালকা বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সম্ভাবনায় মাঠে হভার কভারও আনা হয়। তবে বৃষ্টির একটু তীব্রতা বাড়তেই আম্পায়াররা খেলা বন্ধ রাখেন এবং ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরুতে বিলম্ব ঘটে।
সকালে ভারত ৩৯৫/৩ স্কোর থেকে খেলা শুরু করে। গিল তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা ১৪৭ রান করেন, আর পন্ত খেলেন চোখ ধাঁধানো ১৩৪ রানের ইনিংস। প্রথম সেশনের প্রথমার্ধে ভারত ৫৩ রান তোলে বিনা উইকেটে। সেই সময় পন্ত তার সপ্তম টেস্ট শতরান পূর্ণ করেন এবং এমএস ধোনিকে (৬টি) পেছনে ফেলে ভারতের সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরি করা উইকেটরক্ষক ব্যাটার হয়ে ওঠেন।
ইংল্যান্ডে পন্তের এটি তৃতীয় শতরান, যা কোনও বিদেশি উইকেটরক্ষক আগে কখনও করতে পারেননি। তার ইনিংসে ছিল শৈল্পিকতা ও সাহসের মিশ্রণ—বেশ কয়েকটি চার-ছয়ের মারকাটারি শট।
পন্ত স্কুপ, স্লগ, হুক, পুলের মাধ্যমে রান তুলতে থাকেন। ১৪৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করে নিজের চেনা সামারসল্ট উদ্যাপন করেন—যা তিনি ছোটবেলায় জিমন্যাস্টিকস অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ত করেছিলেন।
এরপর বাশিরকে ছক্কা মেরে গিলের সঙ্গে ২০০ রানের জুটি পূর্ণ করেন। তবে সেই বাশিরই গিলকে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ করিয়ে ১৪৭ রানে ফিরিয়ে জুটিটি ভেঙে দেন।
এরপর পন্ত স্টোকসকে চার ও বাশিরকে ছয় মারেন, কিন্তু অপর প্রান্তে করুণ নায়ারের প্রত্যাবর্তন ছিল হতাশাজনক। আট বছর পর টেস্ট দলে ফিরে চার বল খেলে স্টোকসের বল তুলে দেন, এবং অলিভ পোপ দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে তাকে শূন্য রানে ফেরান।
এরপর রিভার্স সুইং কাজে লাগিয়ে পন্তকে বিভ্রান্ত করেন জশ টাং। তিনি অফস্টাম্প থেকে বল এনে পন্তকে ফাঁদে ফেলেন। পন্ত শট না খেলে এলবিডব্লিউ হন। লাঞ্চের ঠিক আগে স্টোকসের বলে শার্দুল ঠাকুরও উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ইংল্যান্ড তখন হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে। লাঞ্চের পর টাং বুমরাহকে ড্রাইভ করতে বাধ্য করে স্লিপে ক্যাচ করান, এরপর জাদেজাকে চাপ দিয়ে বোল্ড করেন। পরে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে স্টাম্প ছিটিয়ে ভারতের ইনিংস মাত্র ২৩ মিনিটেই গুটিয়ে দেন।