দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর অবশেষে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কাঠামোয় বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে জিএসটিতে আর থাকবে না চারটি স্ল্যাব। শুধুমাত্র ৫ শতাংশ ও ১৮ শতাংশের জিএসটি থাকবে। এই পরিবর্তনের মধ্যে জল্পনা শোনা গিয়েছিল যে মদের উপরেও আলাদাভাবে জিএসটি বসতে পারে। সত্যিই কি সরকার এবার মদের উপরে জিএসটি চাপাবে? উত্তর দিলেন খোদ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনই।
আরও খবর-'আমরা বেকারত্বের শৃঙ্খলে...,' গণবিক্ষোভের জ্বলছে নেপাল, ভাইরাল ছাত্রের জ্বালাময়ী ভাষণ
এনডিটিভির এক শীর্ষ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় অথমন্ত্রী বলেন, আইন অনুসারে, বর্তমানে রাজ্য সরকারগুলিই অ্যালকোহল বা পানীয় মদের উপরে কর বসায়। উৎপাদন বা ম্যানুফাকচারিংয়ের উপরে আবগারি শুল্ক এবং বিক্রির উপরে ভ্যাট বসানো হয়। এই দুই কর মিলিয়েই রাজস্ব আয় হয় রাজ্যগুলির। তাঁর কথায়, 'এটা রাজ্যগুলির উপর নির্ভর করে... আমি কোনও মন্তব্য করতে পারছি না।' গত মার্চেই দিল্লি সরকার আবগারি শুল্ক বাবদ ৫ হাজার ৬৯ কোটি টাকা আয় করেছিল। সেখানেই দুধ বিক্রি করে আয় হয়েছিল মাত্র ২১০ কোটি টাকা। বিগত ৩ বছর ধরেই রাজ্যের আয় হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।এছাড়াও, ২০২৪ অর্থবর্ষে মহারাষ্ট্রে মদ বিক্রি করে আয় হয়েছিল ২৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। এবার আরও ১৪ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় হতে পারে। তামিলনাড়ুতে মদ বিক্রি করে আয় আরও বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে আয় হয়েছিল ৪৮ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। তার আগের বছর আয় হয়েছিল ৪৫ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা।সম্প্রতি জিএসটি কাউন্সিল মদের উপরে ৪০ শতাংশ সিন ট্যাক্স বা পাপ কর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে মদের দাম আরও বাড়তে চলেছে।
আরও খবর-'আমরা বেকারত্বের শৃঙ্খলে...,' গণবিক্ষোভের জ্বলছে নেপাল, ভাইরাল ছাত্রের জ্বালাময়ী ভাষণ
অন্যদিকে, সাম্প্রতিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন। এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে সীতারমন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জিএসটি স্ল্যাব সংস্কার সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়। তিনি বলেন, 'আমরা অনেক আগে থেকেই এই প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছি। ট্রাম্পের ঘোষণার সঙ্গে এর কোন যোগসূত্র নেই।' তবে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, ২০২২ সালের পর থেকে রাজ্যগুলিকে আলাদা করে কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। পূর্বে জিএসটি কাঠামোর অংশ ছিল ‘কম্পেনসেশন সেস’, যার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ রাজ্যগুলিকে সমানুপাতিক হারে প্রদান করা হতো। বর্তমানে যে সেস আদায় হচ্ছে, তা কোভিডের সময় নেওয়া ঋণ শোধ করতেই ব্যবহার হচ্ছে।অর্থমন্ত্রীর কথায়, 'আজ যে সেস আদায় হচ্ছে, তা রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির কোভিড ঋণ পরিশোধে কাজে লাগবে। রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতো কেন্দ্রের কাছে আলাদা কোনো তহবিল নেই।'