আহমেদাবাদের বেসরকারি স্কুলে নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার বিরুদ্ধে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গুজরাট জুড়ে।এই আবহে অভিযুক্তর একটি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তাঁকে খুনের অভিযোগ স্বীকার করতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, অন্য এক সহপাঠী তাকে কী পরামর্শ দিচ্ছে সেটাও স্পষ্ট।
জানা গিয়েছে, ওই দুই ছাত্রের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি, তা থেকে পরে হাতাহাতি শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, আর সেই সময় নবম শ্রেণির ছাত্রটি সহপাঠীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। রক্তাক্ত অবস্থায় আহত ছাত্রকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চেষ্টা করেও চিকিৎসকরা প্রাণ বাঁচাতে পারেননি। বুধবার চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় দশম শ্রেণির ওই কিশোরের।ঘটনার পরদিন সকাল থেকেই মৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় বাসিন্দারা এবং অভিভাবকরা স্কুল ঘিরে বিক্ষোভে সামিল হন।অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কর্মীরাও হাজির হন সেখানে। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত বাহিনী নামিয়ে ভেতর থেকে সবাইকে সরানো হয়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। স্কুলে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। যদিও পুলিশ পরে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে বাইরে গিয়েও বিক্ষোভ থামেনি। স্কুলের সামনে রাস্তায় বসে পড়ে ভিড়। পথ অবরোধ করে স্লোগান তোলা হয় পুলিশের বিরুদ্ধে, প্রশাসনের জবাবদিহি দাবি করে।
হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ভাইরাল
এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুসারে, ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিযুক্ত ছাত্র এক বন্ধুকে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে নিজের দোষ স্বীকার করে। সেই মেসেজ প্রকাশ্যে এসেছে। চ্যাটে দেখা যায়, বন্ধুর প্রশ্নের উত্তরে অভিযুক্ত পড়ুয়া স্পষ্ট বলে, 'হ্যাঁ, আমি করেছি। আমাকে প্রশ্ন করছিল, কে আমি, কী করতে পারব, তাই...।' এরপরেই অন্য বন্ধু বলে, 'মারতে পারতিস, তবে মেরে ফেলা ঠিক হয়নি।' জবাবে অভিযুক্ত কেবল বলে, 'যা হওয়ার হয়ে গেছে।' শেষে বন্ধু পরামর্শ দেয়, কিছু দিন আড়ালে থাকতে আর তৎক্ষণাৎ চ্যাট মুছে ফেলতে। তখন অভিযুক্ত ছাত্র বলে, ঠিক আছে।' যদিও ওই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা।
এদিকে পুলিশের যুগ্ম কমিশনার জয়পাল সিং রাঠোর বলেন, 'বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেনি । কিন্তু আমরা এফআইআর দায়ের করেছি এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে । বিক্ষোভকারীরা বলছেন যে স্কুল প্রশাসনের কিছু জড়িত থাকার কথা রয়েছে, যার বিষয়ে আমরা তাদের লিখিতভাবে জানাতে বলেছি যাতে আমরা শিক্ষা দফতরে জমা দিতে পারি ।' এই ঘটনায় আহমেদাবাদ ক্রাইম ব্রাঞ্চের শরদ সিংহল বলেন, 'পরিবারের দাবি অনুযায়ী মামলার তদন্ত ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে । অপরাধী এক নাবালক-সহ দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। আরও একজন প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তকে ঘটনায় নাবালককে সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে । ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ করেছে যে, সাত কিশোর এই ঘটনায় জড়িত ছিল । তা যাচাই করা হচ্ছে । স্কুল অপারেটরদের বিরুদ্ধে জলের ট্যাঙ্কার অর্ডার করে প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করার অভিযোগও তদন্ত করে দেখা হবে । খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।'