রটওয়েলার প্রজাতির কুকুর। নাম ‘হেনরি।' নামটি কে রেখেছিলেন, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, নাকি তাঁর এককালের বন্ধু আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই, তা জানা যায়নি। সেই সঙ্গে ‘হেনরি’ নামক কুকুরটি আসলে কার, তা নিয়ে ২০২৩ সাল থেকে জলঘোলা হচ্ছে। দু’জনেরই দাবি, কুকুরের আসল মালিক তিনিই। এবার এই মামলায় সামনে আসল নয়া মোড়।
জানা গেছে, ট্রায়াল কোর্টের একটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এবার দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই। এর আগে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ইতি টানার পর মহুয়া মৈত্র সাকেত জেলা আদালতে কুকুরটির হেফাজতের জন্য একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেছিলেন। বুধবার দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি মনোজ জৈন প্রশ্ন করেন, দুই পক্ষ কেন আদালতের বাইরে বসে কুকুরের হেফাজত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, 'কেন আপনারা একসঙ্গে বসে এর সমাধান করছেন না?' দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে জয় অনন্ত দেহদ্রাই যুক্তি দেন যে, ট্রায়াল কোর্টের গ্যাগ অর্ডার তাঁর বাকস্বাধীনতার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। পাশাপাশি এই মামলাটিকে তিনি 'অযৌক্তিক' বলে মনে করেন। মামলা বিষয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন-ট্রাম্পকে সামনে দিয়ে EU বাণিজ্য চুক্তিতে মরিয়া ভারত! জার্মান বার্তা জয়শংকরের
জয় অনন্ত দেহদ্রাইয়ের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মামলাটি নিয়ে দুই পক্ষকে কথা বলতে না দেওয়ার জন্য ট্রায়াল কোর্টের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে ব্যাথিত হয়েছেন অনন্ত দেহদ্রাই। মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মামলায় ২০২৫ সালের মার্চ মাসে সাকেতের একটি আদালত এই নির্দেশ দিয়েছিল। অনন্ত আরও বলেন, তিনি এর আগে 'এক্স'-এ মামলাটি নিয়ে একটি তথ্য পোস্ট করেছিলেন। তবে মামলার কোনও বিশদ বিবরণ উল্লেখ করেননি। তবে, ট্রায়াল কোর্ট পোস্টটিকে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বলে জানায় এবং তাঁকে কোনও মন্তব্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়। এরপরে তিনি প্রতিবাদ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পোস্টটি সরিয়ে দেন। হাইকোর্টের বিচারপতি মহুয়া মৈত্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছেন। ২২ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুননি হবে।
আরও পড়ুন-ট্রাম্পকে সামনে দিয়ে EU বাণিজ্য চুক্তিতে মরিয়া ভারত! জার্মান বার্তা জয়শংকরের
এর আগে ২০২৩ সালে জয় অনন্ত দাবি করেন, ২০২১ সালে দিল্লির জনকপুরীতে এ বি বহুগুনার থেকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে কুকুর কেনেন তিনি। প্রথমে ১০ হাজার ও পরে ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে ওই কুকুর কেনেন তিনি বলে জানান। অভিযোগের সঙ্গে প্রমাণের জন্য নথিও জমা দেন আইনজীবী। হেনরির রেজিস্ট্রেশন নম্বরও জমা দিয়েছেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেছেন যে তিনি হেনরির ৪০ দিন বয়স থেকেই তার দেখাশোনা করছেন। এবং হেনরির কখন, কী প্রয়োজন, সে সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট ধারনা আছে বলেও দাবি করেন।পাল্টা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র জানান, হেনরি নামক কুকুরটি আসলে তাঁর। তিনি অভিযোগ করেছেন যে তাঁর সরকারি বাসভবনে ঢুকে হেনরি-কে চুরি করেছিলেন জয়। মহুয়া বলেন যে পরে হেনরিকে ফিরিয়ে দেন। তবে পরে আবারও একই ঘটনা ঘটলে, পরপর দুটি অভিযোগ জানিয়েছিলেন বলে দাবি মহুয়ার।