জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-র বিরুদ্ধে। এবার জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) জানতে পেরেছে, কারা টিআরএফ-কে অর্থসাহায্য করে। সূত্রের, এই তথ্যপ্রমাণ আন্তর্জাতিক স্তরে পেশও করবে ভারত।
এনআইএ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা ৪৬৩টি ফোনকল ঘেঁটে জানতে পেরেছেন, একাধিক দেশ এই টিআরএফ-কে টাকা দিয়ে সাহায্য করে। সেই তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, মালয়েশিয়া এবং উপসাগরীয় এলাকায় একাধিক দেশ। এই তদন্তে উঠে এসেছে মালয়েশিয়ায় থাকা ইয়াসির হায়াত নামে একজন সন্দেহভাজন ওই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে ৯ লাখ টাকা দিয়েছে। লস্কর জঙ্গি সাজিদ মীরের সঙ্গে ইয়াসির হায়াতের যোগাযোগের তথ্যও উদঘাটিত হয়েছে।ব্যাঙ্কিং লেনদেনের কিছু তথ্যও তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। এই ঘটনা ভারতের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তদন্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এনআইএ শ্রীনগর এবং হান্দওয়ারায় অভিযান চালিয়ে টিআরএফ-এর বিদেশী তহবিল নেটওয়ার্কের নথি এবং আর্থিক বিবরণ উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন-'পহেলগাঁও হামলায় আপনার নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে', বৃদ্ধার ৪৩ লাখ গায়েব করল প্রতারকরা
এনআইএ হান্দওয়ারায় বাসিন্দা শফাত ওয়ানির বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে, যেখানে তার বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কাজের জন্য প্ররোচনা দেওয়া ও টিআরএফ-এর জন্য বিদেশ থেকে তহবিল সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করছিল বলে জানানো হয়েছে। কেন্দ্রের একটি সূত্রের দাবি, এফএটিএফ যাতে আবার পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করে, ভারত সেই চেষ্টা করতে এই তথ্যগুলি তুলে ধরবে।বস্তুত, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকাতেই ছিল।এনআইএ-র একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ৪৬৩টি যোগাযোগ এবং সংশ্লিষ্ট মামলাগুলির বিশদ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এটি আমাদের টিআরএফ-এর তহবিলের উৎস এবং নেটওয়ার্ক সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করবে।এই তদন্তের ফলাফল ভারতের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের জঙ্গি তহবিলের ভূমিকা উন্মোচন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। টিআরএফ-কে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশী জঙ্গি সংগঠন এবং বিশেষভাবে মনোনীত গ্লোবাল সন্ত্রাসবাদী সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এই ঘটনা পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপের পুনঃব্র্যান্ডিং কৌশলকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
আরও পড়ুন-'পহেলগাঁও হামলায় আপনার নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে', বৃদ্ধার ৪৩ লাখ গায়েব করল প্রতারকরা
টিআরএফ, লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি)-এর একটি প্রক্সি সংগঠন হিসেবে পরিচিত।এটি ২০১৯ সালে গঠিত হয়েছিল। এটি হিজবুল মুজাহিদিনের কমতে থাকা প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জঙ্গি কার্যকলাপকে নতুন পরিচয় দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।নয়া দিল্লির বক্তব্য, এদের মূল লক্ষ্য, কাশ্মীরে স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটানো। তার জন্য নাশকতামূলক কাজকর্মের পুনর্বিন্যাস করার চেষ্টা শুরু করেছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।