'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন ভ্লাদিমির পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বিছানায় যাচ্ছেন।' এমনই কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো।ভারতের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন আয়োজিত হয় চিনে। সোমবারই সেই সামিট থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংকে দুপাশে নিয়ে ছবি পোস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তারপরই বদলে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাচনভঙ্গি।
মার্কিন দূতাবাস এবং সচিবালয় থেকে ভারত নিয়ে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেও একেবারে অন্য সুর ডোনাল্ড বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারোর। একদিকে তিনি দাবি করেন ভারতের উপর ৫০ বা ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে কারণ ভারত শুল্কের মহারাজা। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও জিনিস ভারতে বিক্রি করতে দিতে চায় না। এর থেকে কার্যত স্পষ্ট এসসিও সম্মেলনে তিন দেশের নেতাকে একসঙ্গে দেখেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অত্যন্ত কুরুচিকর ভাবে নাভারো দাবি করেন, 'মোদী একজন মহান নেতা… কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতা হয়ে তিনি কেন পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বিছানায় যাচ্ছেন। এর কোনও মানে হয় না। আমি নিশ্চিত নই যে তিনি কী ভাবছেন, বিশেষ করে যেহেতু ভারত কয়েক দশক ধরে চিনের সঙ্গে ঠান্ডা যুদ্ধে লিপ্ত।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা আশাবাদী ভারতীয় নেতা বুঝতে পারবেন যে তাঁকে রাশিয়ার সঙ্গে নয়, আমাদের ইউরোপ এবং ইউক্রেনের সঙ্গে থাকতে হবে।'
আরও পড়ুন-ঘুমের মধ্যেই সব শেষ! আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু মিছিল, চারিদিকে হাহাকার
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে যখন চিনা ও রুশ প্রেসিডেন্টের বন্ধুত্ব নিবিড় হচ্ছে, ঠিক তখনই ভারতকে ফের বন্ধু বলে গলা জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার শুল্কচাপের পরিবেশের মধ্যেও নয়া দিল্লিকে বন্ধুত্বের বার্তা দিয়ে ভবিষ্যতেও তা চলবে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।এক এক্স বার্তায় মার্কিন দূতাবাস বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে উদ্ধৃত করে ভারত-মার্কিন বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। পোস্টে লেখা হয়েছে, ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতা চলছে এবং তা এক নয়া শিখরে পৌঁছবে। একুশ শতকের পৃথিবীতে এটা এক নয়া সংজ্ঞা দেবে। এছাড়াও ভারতে থাকা মার্কিন দূতাবাসের এই সম্পর্কের ভূয়সী তারিফ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-ঘুমের মধ্যেই সব শেষ! আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু মিছিল, চারিদিকে হাহাকার
এশিয়ার তিন বৃহৎ শক্তির এক মঞ্চে আসা যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘুম ছুটিয়েছে, তাদের নরম এবং গরম – একসঙ্গে দুই মন্তব্যে সেটা স্পষ্ট। তবে জাতি তুলে যে কুরুচিকর আক্রমণে নেমেছেন পিটার নাভারো, ভারত তার কি প্রত্যুত্তর দেয় এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।