'ভারত কোনও আন্তর্জাতিক নিয়ম লঙ্ঘন করেনি।' রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত চাপ ও সমালোচনার সপাটে জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। সম্প্রতি শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েন চলছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে।
এই আবহে সোমবার 'দ্য হিন্দু'-তে প্রকাশিত একটি কলামে হরদীপ সিং পুরী লেখেন, 'সমস্ত আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলার ফলে ভারতের ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলারের ভয়াবহ ধাক্কা ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। কিছু সমালোচক অভিযোগ করেছেন যে ভারত রাশিয়ার তেলের ‘লন্ড্রি।' কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।' তিনি জানান, ভারত মূল্যসীমা ব্যবস্থার মধ্যে থেকেই তেল আমদানি করছে, যার উদ্দেশ্য হল রাশিয়ার আয় সীমিত রাখা এবং বাজারে তেল সরবরাহ চালু রাখা। সম্প্রতি হোয়াইট হাউজের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ভারতের 'ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় মুনাফা করছে সাধারণ মানুষের খরচে' এবং রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা ‘বোধগম্য নয়।' তিনি আরও বলেন, 'ভারতের মানুষকে বুঝতে হবে কী ঘটছে। ব্রাহ্মণরা মুনাফা করছে, আর সেটা বন্ধ হওয়া দরকার।'
আরও পড়ুন-'হংকি!' জিনপিংয়ের প্রিয় 'রেড ফ্ল্যাগই' প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর সঙ্গী
এর আগেও মার্কিন অর্থসচিব স্কট বেসেন্ট ভারতীয় ধনী পরিবারের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রে জ্বালানি জোগানোর’ অভিযোগ করেন। তাঁদের মতে, ভারত 'ক্রেমলিনের জন্য একটি লন্ড্রিম্যাটে' পরিণত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লেখেন, 'ভারত কোনও নিয়ম ভঙ্গ করেনি।' তিনি আরও বলেন, নয়া দিল্লির রাশিয়ান তেল আমদানি জি-৭ প্রাইস-ক্যাপ ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল যা মস্কোর রাজস্ব সীমিত করার পাশাপাশি অপরিশোধিত তেলের প্রবাহ বজায় রাখার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ভারত বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা এনেছে, ২০০ প্রতি ব্যারেল তেলের দামে বিশ্ব অর্থনীতি যে ধাক্কা খেত, তা রোধ করেছে। রাশিয়া থেকে তেল কেনা পুরোপুরি আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে ভারত বাজারে সরবরাহ বজায় রেখে ও দাম নিয়ন্ত্রণে এনে বিশ্ব অর্থনীতির উপকার করেছে।
আরও পড়ুন-'হংকি!' জিনপিংয়ের প্রিয় 'রেড ফ্ল্যাগই' প্রধানমন্ত্রী মোদীর সফর সঙ্গী
ভারতের উপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে তিনি জানান, রাশিয়ার কাছ থেকে লাগাতার তেল কেনার কারণে ভারতকে ‘জরিমানা’ দিতে হবে। পরে শাস্তি হিসাবে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয় ভারতের পণ্যের উপর। ফলে মোট রফতানি শুল্কের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ। এই বিপুল শুল্কের কারণে বাণিজ্য ধাক্কা খাচ্ছে। বাতিল হয়ে যাচ্ছে বহু পণ্যের বরাত।