গত মঙ্গলবার মেঘ ভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জোড়া প্রভাবে তছনছ হয়ে গিয়েছে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী এলাকার একাংশ। পাহাড়ের ঢাল থেকে নেমে আসা পাথর ভর্তি কাদা জলে চাপা পরে গিয়েছে বিস্তীর্ন এলাকার বাড়ি-ঘর, হোটেল। সেই ভয়ানক ঘটনার পর কেটে গিয়েছে ৩ দিন। এখনও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে চলছে উদ্ধারকাজ। অন্যদিকে, গুরুতর শারীরিক আঘাত নিয়ে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন হাসপাতালে এক ডজন- গ্রামবাসী এবং সেনা জওয়ানরা মানসিকভাবে লড়াই করছেন।
আরও পড়ুন-শিক্ষাব্যবস্থায় আত্মত্যাগের চেতনা! NCERTর পাঠ্যসূচিতে মানেকশরা, বাদ টিপু সুলতান
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে উত্তরাখণ্ডের হাসপাতালগুলিতে প্রায় ছবি দেখা যাচ্ছে।আহতদের মধ্যে কারোর ফুসফুসে কাদা ঢুকে গিয়েছে।আবার কারোর পাঁজরের হাড় ভেঙে গেছে। কয়েকজন রোগীর গলায় পাথর পর্যন্ত ঢুকে গিয়েছে। ভেঙেছে হাড়। সে সঙ্গে তাদের মনও ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।তেমনিই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে দেরাদুনের হাসপাতালে ভতি রয়েছেন একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল।তাঁর বা পায়ে বড় ফ্র্যাকচার হয়েছে। অন্যদিকে, ঋষিকেশের এইমস-এ আরও একজন রোগীর অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর।তাঁর পাঁজরের হাড় ভেঙে গিয়েছে।হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অভু রোগীই উত্তরকাশীতে উদ্ধারকারী দলের অংশ ছিলেন। উদ্ধারকার্য চলাকালীন তারা হড়পা বানের তোড়ে ভেসে যান। জল, পাথর এবং কাদার আঘাত খেয়ে প্রায় ১৫০ মিটার দূরে ছিটকে গিয়ে পড়েন। উত্তরকাশীর জেলা হাসপাতালের ডাঃ প্রেম পোখরিয়াল বলেন, বর্তমানে আহতদের স্থিতিশীল।অস্ত্রোপচারের সময় অনেকের ফুসফুস, গলার মধ্যে থেকে নুড়ি-পাথর, কাদা পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন-শিক্ষাব্যবস্থায় আত্মত্যাগের চেতনা! NCERTর পাঠ্যসূচিতে মানেকশরা, বাদ টিপু সুলতান
উত্তরকাশী জেলার চিকিৎসা দলের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রিয়া ত্যাগী বলেন, 'আহতরা প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। এই দুর্যোগ তাদের মনকে গভীরভাবে নাড়া দিয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ কী ঘটেছে তা বুঝতেও পারেনি। তারা ভীত এবং বিভ্রান্ত - কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ধীরে ধীরে তাঁরা পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন।' স্বাস্থ্য সচিব ডাঃ রাজেশ কুমার বলেন, '১৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল এবং পাঁচ জনকে দেরাদুনে রেফার করা হয়েছিল। তিনজনকে এইমস এবং দুজনকে সামরিক হাসপাতালে। একজনের অবস্থা এখনও গুরুতর; অন্যরা স্থিতিশীল রয়েছেন।' তিনি আরও বলেন, 'ধারালি, হারসিল, মাতলি এবং উত্তরকাশী - চারটি জায়গায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং প্যারামেডিকদের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। মোট ৩০০টি বেড, ৪৫টি অ্যাম্বুলেন্স এবং পাঁচটি মর্চুয়ারি ভ্যান চিকিৎসা সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।'