এবার দেশের রাজধানী দিল্লিতে অতুল সুভাষ আত্মহত্যার ছায়া! এক তরুণ ক্যাফে মালিকের দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে আবারও কাঠগড়ায় নিহতের স্ত্রী!বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লির মডেল টাউন কল্যাণ বিহারের বাড়ি থেকে ওই ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতের নাম পুনীত খুরানা। ৪০ বছরের পুনীতের ঝুলন্ত দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে জানা গিয়েছে। দিল্লিতে পুনীতের যৌথ মালিকানাধীন একটি ক্যাফে রয়েছে। তাঁর এই অস্বাভাবিক এবং আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য।পুনীতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পুনীতের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে পৌঁছেছিল। তাঁদের মধ্যে ডিভোর্সের মামলা চলছিল। ঘটনা হল, পুনীত ও তাঁর স্ত্রী মণিকা জগদীশ পাহওয়ার যৌথ মালিকানার অধীনেই রয়েছে দিল্লির সংশ্লিষ্ট ক্যাফেটি। যা রাজধানী শহরে অত্যন্ত জনপ্রিয়।পুনীতের পরিবারের অভিযোগ, তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে অত্যন্ত হতাশায় ভুগছিলেন। একদিকে ছিল ডিভোর্সের মামলা, অন্যদিকে তার ফলে তৈরি হওয়া ব্যবসায়িক টানাপোড়েন। এই দুইয়ের মাঝে পড়ে রীতিমতো অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছিলেন পুনীত। সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের তরফেও একই তথ্য সামনে এসেছে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পুনীত ও মণিকার বিয়ে হয়েছিল ২০১৬ সালে।এনডিটিভি-র তরফ থেকে এই বিষয়ে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ১৬ সেকেন্ডের একটি অডিয়ো রেকর্ডের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে, সেই অডিয়ো রেকর্ডে ব্যবসা নিয়ে পুনীত ও মণিকার মধ্যেকার ঝগড়া শোনা গিয়েছে!এও দাবি করা হচ্ছে যে ওই রেকর্ডিং আসলে একটি ফোনকলের অংশ। যেখানে পুনীতের উদ্দেশে মণিকাকে বলতে শোনা গিয়েছে, 'আমরা ডিভোর্স নিতে চলেছি। কিন্তু, আমি এখনও একজন বিজনেস পার্টনার। তোমাকে আমার সমস্ত পাওনা মিটিয়ে দিতে হবে।'অন্যদিকে, সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে পুনীতের পরিবারের সদস্যরা যেসমস্ত কথা বলেছেন, তা আরও চাঞ্চল্যকর। পুনীতের মা, বোন - সকলেরই অভিযোগ, মণিকা ও তাঁর বাবা-মায়ের লাগাতার অত্যাচারেই পুনীত আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন। পুনীতের বোন জানিয়েছেন, আসলে পুনীত ও মণিকার যৌথ মালিকানায় একটি ক্যাফে এবং একটি বেকারি ছিল। কিন্তু, ডিভোর্সের মামলা শুরু হওয়ার পরই আদালতে লিখিতভাবে একটি সমঝোতা হয়।সেই সমঝোতা অনুসারে, পুনীতের ভাগে আসে বেকারি এবং পুনীতের স্ত্রী মণিকার ভাগে আসে ক্যাফে। কিন্তু, এরপরও মণিকা বেকারির ভাগ চেয়ে পুনীতকে উত্যক্ত করতেন বলে অভিযোগ। এমনকী, তিনি পুনীতের ইনস্টাগ্রাম হ্যাক করে নানা অপকর্ম করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন পুনীতের বোন।তাঁর দাবি, ইনস্টাগ্রাম হ্যাকের বিষয়টি সামনে আসার পর এ নিয়ে কথা বলার জন্য গভীর রাতে স্ত্রীকে ফোন করেন পুনীত। সেই সময় তাঁদের মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়। পুনীতের বোনের দাবি, সেই কথোপকথনের প্রায় এক ঘণ্টার একটি ভিডিয়ো রেকর্ডিং রয়েছে।পুনীতের বোন জানিয়েছেন, তাঁরা সেই ভিডিয়ো রেকর্ডিং পুলিশকে দিয়েছেন। পুনীতের মোবাইলও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা ওই রেকর্ডিংয়ের একটি কপি চাইলেও পুলিশ তাঁদের সেটা দেয়নি।এই প্রেক্ষাপটে পুনীতের স্ত্রীকে পুলিশের তরফে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি সূত্রের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও দাবি সূত্রের।