বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মধ্যেও ভারতের অর্থনৈতিক উজ্জ্বলতাকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। উল্লেখ্য, আজ উত্তর প্রদেশ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড শো (ইউপিআইটিএস)-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি কেবল 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র শক্তির প্রশংসা করেননি, আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্নকে আরও ডানা মেলতে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, বিশ্বব্যাপী বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ভারত এগিয়ে চলেছে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে স্বনির্ভরতার পথে হাঁটছে ভারত। তাই বিশ্ব বাণিজ্যে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও ভারত থেমে নেই।' উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরোপ করা মোটা শুল্ক এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের এইচ১বি ভিসা ফি বৃদ্ধির মতো ঘটনাতে ভারতে উদ্বেগ বাড়লেও দেশ থেমে নেই।
প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও ভারত স্বনির্ভরতার পথে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হল ভারতে যা কিছু তৈরি করা যেতে পারে, তা এখানেই তৈরি করা।' মেক ইন ইন্ডিয়া নীতিকে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, 'সরকার এজন্য সর্বাত্মক প্রয়াস চালাচ্ছে। ছোটখাটো ভুলের জন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলি বাতিলের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ব্যবসার পরিবেশকে সহজ করে তুলেছি আমরা।' ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের প্রকল্পগুলির কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, 'গভর্নমেন্ট ই-মার্কেটপ্লেস' (জিইএম) পোর্টাল কীভাবে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র দোকানদার এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের সরকারের সাথে ব্যবসা করার সুবর্ণ সুযোগ দিয়েছে।
মোদী বলেন, 'আগে এটা ভাবাও কঠিন ছিল যে একজন ছোট দোকানদার সরকারের কাছে পণ্য বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু আজ এই পোর্টালের মাধ্যমে প্রায় ২৫ লক্ষ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাঁদের পণ্য বিক্রি করছেন। এটাই নতুন ভারতের শক্তি!' ২০৪৭ সালের মধ্যে 'বিকশিত ভারত'-এর স্বপ্ন দেখে ভারতের ভবিষ্যতের রূপরেখা তিনি তৈরি করেছেন বলে জনান প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, '২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের লক্ষ্য অর্জন কোনও স্বপ্ন নয়, বরং একটি সংকল্প। এজন্য সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্রুতগতিতে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও ভারতের অর্থনীতি কেবল স্থিতিশীলই নয়, বিশ্বের কাছে একটি উদাহরণ হয়ে উঠছে।'
নিজের ভাষণে মোদী আত্মনির্ভরতাকে ভারতের শক্তি বলে বর্ণনা করে বলেন, 'আমরা শুধু নিজেদের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও সৃষ্টি করব। ভারতের প্রতিটি পণ্য, প্রতিটি পরিষেবা আন্তর্জাতিক স্তরে তার ছাপ রেখে যাবে।' প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, 'শিগগিরই রাশিয়ার সহায়তায় তৈরি কারখানায় একে-২০৩ রাইফেলের উৎপাদন শুরু হবে। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশে একটি বিশাল ডিফেন্স করিডরও রূপ নিচ্ছে। ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র সহ বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের উৎপাদন ইতিমধ্যেই এই করিডরে শুরু হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এটি একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ।'