মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি সচিব ক্রিস রাইট ভারতের তেল কেনা নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন। রাশিয়ার থেকে ভারতের তেল কেনার সম্পর্কে মার্কিন অবস্থান পরিষ্কার করে তিনি বলেছেন যে ভারত বিশ্বের যে কোনও দেশ থেকে তেল কিনতে পারে, শুধুমাত্র রাশিয়ার থেকে নয়। তিনি আরও বলেন, 'ভারত রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনে লাভবান হচ্ছে, তবে তারা অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। তারা তেল কিনে এমন একজন ব্যক্তিকে (পুতিন) অর্থ দিচ্ছে যিনি প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছেন।'
রাইট বলেন, 'বিশ্বে প্রচুর তেল রফতানিকারক রয়েছে। রাশিয়ার তেল কেনার দরকার নেই ভারতের। ভারত রাশিয়ার তেল কেনে কারণ সেটা সস্তা। অন্য কেউ রাশিয়ার তেল কিনতে চায় না; তাই ছাড়ে তেল বিক্রি করতে হয় রাশিয়াকে।' তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে 'শাস্তি' দিতে চায় না, বরং ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চায় এবং ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে তেল কিনতে পারে। তিনি বলেন, 'আমরা চাই ভারত তেল কেনার জন্য আমাদের সঙ্গে কাজ করুক। আমেরিকা তো তেল বিক্রি করার জন্য বসে আছে, বাকি আরও অনেকের কাছে তেল আছে। আমরা ভারতকে শাস্তি দিতে চাই না। আমরা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চাই এবং ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বাড়াতে চাই।'
এদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে বড় বিবৃতি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই যুদ্ধের জন্য ফের একবার ভারতকে দায়ী করেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় (ইউএনজিএ) দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার তেল কিনে ইউক্রেনে রুশ যুদ্ধের 'প্রধান অর্থদাতা' ভারত এবং চিন। ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ান তেল কেনার জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর জেরে ভারতের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত মোট শুল্ক ৫০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। এদিকে আমেরিকা ভারতে ওপর শুল্ক চাপালেও নিজেরা রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম কেনা জারি রেখেছে। এদিকে ইউরোপও রাশিয়ার থেকে জ্বালানি কিনছে। এদিকে ভারতে শোধিত রুশ জ্বালানি তেলও সস্তায় কিনছে ইউরোপ। এমনকী ভারতের থেকে বিপুল পরিমাণ ডিজেল কেনে ইউক্রেন নিজে। এই আবহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই যুদ্ধে ভারত মূলত ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। তিনি অবশ্য জ্বালানি খাতে ভারতের কিছু 'সমস্যার' কথা স্বীকার করেছেন, তবে এই 'সমস্যাগুলি' সমাধান করা যেতে পারে বলেও যোগ করেছেন জেলেনস্কি।