কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে মঙ্গলবারের প্রবল বর্ষণে শহরের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত জমে থাকা জলই একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত আটজন এবং অন্যান্য এলাকায় আরও ২ জন মারা যান। যার ফলে মোট দশজনের মৃত্যু হয়। এই অবস্থায় মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: কলকাতায় মৃতের পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী, পাশে থাকার আশ্বাস
বুধবার ভবানীপুরে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। প্রয়োজনে পরিবারের কারও হোম গার্ডের চাকরিও দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া তিনি সিইএসসি-কে নির্দেশ দেন, প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে সাহায্য করতে। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো হল সকলের কর্তব্য।
মঙ্গলবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল মোমিনপুরের এক যুবকের মৃত্যু এবং বেহালার শুভ প্রামাণিক নামে ২৪ বছর বয়সী তরুণের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া। শুভ প্রামাণিক পূর্বপাড়া থেকে মতিলাল গুপ্ত রোডের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজে যাচ্ছিলেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে অফিসে ঢুকে জেনারেটর সরানোর সময় তিনি বিদ্যুতের সংস্পর্শে আসেন। দ্রুত তাঁকে বাঙুর হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদের পরিবারের পাশে থাকার জন্য কলকাতার মেয়র ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মুখ্যমন্ত্রী শোকগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সমবেদনা প্রকাশ করেন। প্রয়োজনে সমস্ত সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
দুর্ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কলকাতায় আটজন, গ্রামবাংলায় আরও দু'জন মারা গেছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা এই ঘটনার জন্য দায় এড়াতে পারবে না। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। জল জমলে বিদ্যুতের তার কেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়, এই বিষয়টি প্রশাসনকে আরও কার্যকরভাবে নজর দিতে হবে। এদিকে, এই ঘটনার জেরে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে এই বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।