কলকাতায় টানা বৃষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে আট জনের। তাঁদের মধ্যে সাত জন শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। বুধবার সকালে সেই শোকের আবহে মৃতদের বাড়িতে গেলেন কলকাতার পুরমন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মোমিনপুরে মৃত জিতেন্দ্র সিংয়ের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি ঠাকুরপুকুরে যান। মঙ্গলবার রাতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ঠাকুরপুকুরের শুভ প্রামাণিক। দুই পরিবারকেই তিনি আশ্বাস দেন, পাশে থাকার। ঠিক সেই সময় মেয়রের ফোনে যোগাযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সরাসরি কথা বলেন মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। ফোনেই সমবেদনা জানান, পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: জল ব্যাকফ্লো করছে, দাবি ফিরহাদের, পঞ্চমীতেও দুর্যোগের শঙ্কা, প্রস্তুতিতে KMC
মঙ্গলবার রাত থেকে ভোর পর্যন্ত অবিরাম বৃষ্টিতে কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল দক্ষিণ কলকাতার একাধিক এলাকা, যাদবপুর, পার্কসার্কাস, তারাতলা, একবালপুর, ভবানীপুর। রাস্তাজুড়ে জমে থাকা জলেই ঘটে একের পর এক দুর্ঘটনা। মোমিনপুর, নেতাজিনগর, ঠাকুরপুকুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ যায় মোট আট জনের। একদিন পর বুধবার সকাল দশটা নাগাদ মোমিনপুরে পৌঁছান মেয়র। সেখান থেকেই মৃতদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবারই এই ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি সিইএসসি-কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, এই মৃত্যুর জন্য তাদের গাফিলতিই দায়ী। আধুনিকীকরণের কাজ করার বদলে শুধু ব্যবসা করছে। বারবার বলা হচ্ছে, কিন্তু কোনও পদক্ষেপ হচ্ছে না। পাশাপাশি তিনি দাবি তোলেন, মৃতদের পরিবারে অন্তত একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে হবে সংস্থার পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, ৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে কলকাতার একাধিক এলাকা। বালিগঞ্জের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির চারপাশে গড়িয়াহাট রোড এখনও জলের নিচে ডুবে। বালিগঞ্জ পার্ক রোডে জল কিছুটা কমলেও বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি কমছে না, বরং পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মধ্য ও উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট এসব জায়গা জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতাতেও একই ছবি। বালিগঞ্জ ছাড়াও পার্ক সার্কাসের ভিতরের একাধিক এলাকা এখনও ডুবে আছে। শেক্সপিয়র সরণি ও কসবার বহু অঞ্চলও জল তলিয়ে রয়েছে। দক্ষিণ শহরতলির অবস্থাও কম করুণ নয়, বিশেষত পাটুলি এখন কার্যত জলের তলায়।