রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে ভারতে সংখ্যালঘুদের সাথে আচরণ নিয়ে 'উদ্বেগ' প্রকাশ করেছিলেন সুইৎজারল্যান্ডের প্রতিনিধি। এরপরই ভারত পালটা জবাব দিল সুইৎজারল্যান্ডকে। ভারতকে 'সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার' পরামর্শ দিয়েছিলেন সুইস দূত। এর জবাবে ইউরোপীয় দেশটিকে তাদের নিজের মাটিতে 'বর্ণবাদ, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং জেনোফোবিয়া' সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেন ভারতীয় কূটনীতিক। অন্যের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের সমস্যারর দিকে মনোনিবেশ করার জন্য সুইৎজারল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানায় ভারত। (আরও পড়ুন: ৯/১১ ভুললে চলবে না, রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে লাদেন খোঁচায় পাকিস্তানকে ধুলেন ভারতীয় দূত)
কী বলেছিল সুইজারল্যান্ড? মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘে সুইস প্রতিনিধি সংখ্যালঘুদের রক্ষা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমকে সমুন্নত রাখার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ করতে বলা হয় ভারতকে। এই আবহে ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সেলর ক্ষিতিজ ত্যাগী একদিন পরে সুইৎজারল্যান্ডকে জবাব দেন। তিনি সুইস প্রতিনিধিকে স্মরণ করিয়ে দেন তাদের দেশে ঘটে চলা 'বর্ণবাদ, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং জেনোফোবিয়া'র মতো সমস্যাগুলি। সুইস প্রতিনিধির মন্তব্যকে 'আশ্চর্যজনক, অগভীর এবং ভুল তথ্য' বলে প্রত্যাখ্যান করেন ত্যাগী। দেশটিকে তাদের নিজস্ব ইস্যুতে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন যে সুইৎজারল্যান্ড ভারতের বাস্তবতার সাথে অবগত নয়।
ভারতীয় দূত বলেন, 'ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও অংশীদার সুইৎজারল্যান্ডের বিস্ময়কর, অগভীর ও ভুল মন্তব্যের জবাব দিতে চাই। যেহেতু তারা ইউএনএইচআরসির (রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন) সভাপতিত্বে রয়েছে, তাই সুইৎজারল্যান্ডের পক্ষে এটি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ যাতে তারা মিথ্যা এবং আবাস্তব এমন কোনও আখ্যান দিয়ে কাউন্সিলের সময় না নষ্ট করেন। বরং বর্ণবাদ, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং জেনোফোবিয়ার মতো নিজস্ব চ্যালেঞ্জগুলির দিকে মনোনিবেশ করা উচিত তাদের।' ভারতের বৈচিত্র্যময় এবং প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের কথাও তুলে ধরেন ত্যাগী। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে ভারতে 'বহুত্ববাদের সভ্যতার আলিঙ্গন' রয়েছে। কূটনীতিক আরও বলেন, 'ভারত সুইৎজারল্যান্ডকে বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের মতো উদ্বেগকে দূর করতে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।'
এদিকে পাকিস্তানও ভারতীয় সংখ্যালঘু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে। তারও কড়া জবাব দেয় ভারত। ৯/১১ হামলা এবং পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন হামলায় নিহত আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের কথা উল্লেখ করে ভারতীয় দূত ত্যাগী বলেন, 'আমাদের ৯/১১ হামলার কথা ভুলে গেলে চলবে না। আগামিকাল সেই হামলার বর্ষপূর্তি। আর আজ আমরা তাদের ভণ্ডামি প্রত্যক্ষ করছি যারা সেই আক্রমণের মাস্টারমাইন্ডকে আশ্রয় দিয়েছিল। যারা সেই জঙ্গি নেতাকে শহিদ হিসাবে গৌরবান্বিত করেছিল।' তিনি আরও বলেন, 'পুলওয়ামা, উরি, পাঠানকোট, মুম্বইয়ের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তালিকাটা অন্তহীন।'