রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চ থেকে ফের একবার পাকিস্তানের সমালোচনা করল ভারত। ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, সন্ত্রাসবাদের মদতদাতাদের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে পুলওয়ামা থেকে পহেলগাঁও, পাকিস্তানের জঙ্গি হামলাগুলির তালিকা তুলে ধরে ভারত। উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক অতল গভীরে তলিয়ে গিয়েছে।
এই আবহে জেনেভায় ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সেলর ক্ষিতিজ ত্যাগী মঙ্গলবার মানবাধিকার কাউন্সিলের ৬০তম অধিবেশনে পাকিস্তানের ভিত্তিহীন এবং ভুয়ো দাবির জবাবে বলেন, 'আমরা আবারও এমন একটি দেশের উস্কানিমূলক প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য হয়েছি, যে দেশের নেতৃত্ব নিজেদেরই একটি আবর্জনার ট্রাকের সাথে তুলনা করেছে। যে দেশ আবারও এই কাউন্সিলের সামনে মিথ্যা এবং বাসি প্রচার পরিবেশন করেছে।'
৯/১১ হামলা এবং পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন হামলায় নিহত আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের কথা উল্লেখ করে ভারতীয় দূত ত্যাগী বলেন, 'আমাদের ৯/১১ হামলার কথা ভুলে গেলে চলবে না। আগামিকাল সেই হামলার বর্ষপূর্তি। আর আজ আমরা তাদের ভণ্ডামি প্রত্যক্ষ করছি যারা সেই আক্রমণের মাস্টারমাইন্ডকে আশ্রয় দিয়েছিল। যারা সেই জঙ্গি নেতাকে শহিদ হিসাবে গৌরবান্বিত করেছিল।' তিনি আরও বলেন, 'পুলওয়ামা, উরি, পাঠানকোট, মুম্বইয়ের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তালিকাটা অন্তহীন।'
ত্যাগী বলেন, 'বিশ্ব ও ভারত এই ঘটনাগুলি ভুলবে না। পহেলগাঁও হামলার জবাবে পরিমিত এবং যথাযথ প্রতিক্রিয়া থেকে এটা স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত।' তিনি বলেন, 'আমরা সন্ত্রাসবাদের কোনও পৃষ্ঠপোষকের কাছ থেকে কোনও শিক্ষা চাই না। যে দেশ সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন করে তার কাছ থেকে কোনও প্রচারের প্রয়োজন নেই; যে দেশের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে, তার কাছ থেকে কোনও পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।' তাঁর কথায়, 'ভারতের প্রতি পাকিস্তানের একগুঁয়েমি অবস্থান তাদের অস্তিত্বের স্বীকৃতি দিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তারপরও আমাদের জবাব দিতে হবে। আমরা একটি ব্যর্থ জাতির প্রতারণা উন্মোচন করতে থাকব। তাদের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে সন্ত্রাসবাদ ও ট্র্যাজেডির ব্যবসার ওপর।'
এদিকে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে সব জঙ্গি ঘাঁটি ভারত গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, সেগুলি ফের নতুন করে গড়তে শুরু করেছে সন্ত্রাসবদী সংগঠনগুলি। এতে পাক সরকারও সহায়তা করছে তাদের। এরই মাঝে ফের একবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা শুরু করেছে পাকিস্তানি জঙ্গিরা। ভারত অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, অপারেশন সিঁদুর এখন শেষ হয়নি। এরপর থেকে কোনও জঙ্গি হামলা হলে তা সরাসরি পাকিস্তানের যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করা হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।