প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ ও দক্ষিণপন্থী আন্দোলনের নেত্রী লরা লুমারের সঙ্গে জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক ও মিডিয়া কোম্পানি জেতেও-র প্রতিষ্ঠাতা ভারতীয় বংশোদ্ভূত তার্কিক মেহেদি হাসানের বাকযুদ্ধে তোলপাড় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মিশিগানে এক মরমন গির্জায় বন্দুকবাজের গুলিতে অন্তত চারজন নিহত ও আটজন আহত হন। পরে সেই গির্জায় আগুন ধরিয়ে দেয় হামলাকারী। আর এই ঘটনায় নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসান বলেন, 'একটি এআর ১৫, একটি মার্কিন পতাকা, এবং একটি গণহত্যা। আমার মতে, এর চেয়ে বেশি আমেরিকান আর কিছু হতে পারে না।' প্রকাশ্যে আসতেই মেহেদি হাসানের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দক্ষিণপন্থী আন্দোলনের নেত্রী লরা লুমার। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, মেহেদি হাসান যদি এই দেশকে 'ঘৃণা' করেন, তাহলে তিনি কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তিনি সাংবাদিককে একজন মুসলিম অভিবাসী হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন। তাঁকে ব্রিটেন বা তাঁর বাবা-মায়ের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মেহেদি হাসান করে লরা লুমার বলেন, 'আপনি একজন মুসলিম অভিবাসী। আপনি যখন ইচ্ছা ব্রিটেন বা আপনার বাবা-মায়ের জন্ম হওয়া ইসলামিক দেশগুলিতে ফিরে যেতে পারেন। আপনি যদি এখানে থাকতে পছন্দ না করেন তবে আপনি কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়ে আছেন?আপনি আমাদের দেশকে ঘৃণা করেন।'
আরও পড়ুন-স্বস্তির বার্তা ভারতীয়দের! H-1B ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত ট্রাম্প সহযোগীর
এরপরেই পাল্টা জবাবে মেহেদি হাসান বলেন, 'ভারত হলো সেই স্থান যেখানে আমার বাবা-মা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ভারত কোনও 'ইসলামিক দেশ' নয়। আপনার জ্ঞান, বুদ্ধি এবং আইকিউর পরিধি ছোট শিশুর মতো।' এরপরেই লরা লুমার ওই সাংবাদিককে আক্রমণকারী বলে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, 'ওহ, তাহলে আপনার বাবা-মা আক্রমণকারী ছিলেন। আর এখন আপনি আমার দেশ আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।' তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ লরা লুমারের কথার ছত্রে ছত্রে ভারত-বিদ্বেষ উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন-স্বস্তির বার্তা ভারতীয়দের! H-1B ভিসা প্রক্রিয়ায় বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত ট্রাম্প সহযোগীর
গত বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম এমএসএনবিসি থেকে পদত্যাগ করেন প্রখ্যাত ব্রিটিশ–আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসান। চ্যানেলটিতে ‘সান ডে শো’ অনুষ্ঠানের হোস্ট ছিলেন তিনি। এরপরেই তিনি নিজের মিডিয়া কোম্পানি জেতেও খোলেন।এমএসএনবিসি থেকে পদত্যাগের ঘোষণার সময়ই মেহেদি হাসান বলেছিলেন, জীবনে নতুন চ্যালেঞ্জের খোঁজে তিনি এই চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও মেহেদি হাসানের ‘সান ডে শো’ তুমুল জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও গত অনুষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে চ্যানেলটি। এই ঘোষণার পর প্রগতিশীল আইনপ্রণেতা ও অধিকারকর্মীরা ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, ইজরায়েল নিয়ে সমালোচনামূলক বক্তব্যের কারণেই তাঁকে নিয়ে আপত্তি কর্তৃপক্ষের।