'আমাদের প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে সম্মান করতে হবে, নয়তো ফল ভোগ করতে হবে।' 'ডিজিটাল ট্যাক্স' নিয়ে সব দেশের রফতানির ওপর ফের মোটা অঙ্কের শুল্ক বসানোর হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে শুল্কনীতি নিয়ে সমালোচিত হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারমধ্যেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে একের পর এক হুঁশিয়ারিও দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এবার বিশ্বজুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির প্রতি ‘বৈষম্যমূলক নীতি’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, 'মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি আমাদের অসাধারণ প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে আক্রমণ থেকে রক্ষা করব। ডিজিটাল ট্যাক্স, ডিজিটাল সার্ভিস লেজিসলেশন কিংবা ডিজিটাল মার্কেট রেগুলেশন - সবকিছুই আসলে অবিশ্বাস্য মার্কিন টেক কোম্পানিগুলিকে আক্রমণ করার জন্য বানানো হয়েছে। অথচ চিনের বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানিগুলিকে এসবের বাইরে রাখা হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে ও এখনই বন্ধ করতে হবে।' তিনি আরও লেখেন, 'আমরা আমাদের সুরক্ষিত প্রযুক্তি ও চিপ রফতানিতে সীমাবদ্ধতা আনব। যে সব দেশ এই ধরনের বৈষম্যমূলক কর বা আইন চাপিয়ে রাখবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের রফতানির উপর বড়সড় শুল্ক বসাবে।' এরপরেই হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্বের পিগি ব্যাঙ্ক কিংবা কারও পায়ের তলায় থাকা কার্পেট নয়। আমাদের অসাধারণ প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে সম্মান করতে হবে, নয়তো ফল ভোগ করতে হবে।'
আরও পড়ুন-দালাল স্ট্রিটে চরম অস্থিরতা! হুড়মুড়িয়ে পড়ছে সেনসেক্স-নিফটি, কারণ কী?
ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি এমন এক সময়ে এল, যখন এক সপ্তাহ আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে।সেখানে জানানো হয়, উভয় পক্ষ মিলে ‘অন্যায্য বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা’ রুখতে একসঙ্গে কাজ করবে। সেই সঙ্গে ইলেকট্রনিক লেনদেনে কোনও শুল্ক বসানো হবে না বলে নিশ্চিত করেছে ইইউ। এমনকী নেটওয়ার্ক ব্যবহারের অতিরিক্ত ফিও না চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২৭ সদস্যের ওই সংগঠন। কিন্তু পরিস্থিতি একেবারেই সহজ নয়।বর্তমানে ডিজিটাল ট্যাক্স ইস্যুটি ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য আলোচনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। গত জুনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করে, কানাডা যদি ডিজিটাল ট্যাক্স প্রত্যাহার না করে তবে তাদের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হবে। অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই একাধিক দেশ ডিজিটাল সার্ভিস ট্যাক্স চালু করেছে বা করতে চলেছে। সাধারণত এই কর কেবলমাত্র বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলির ওপরই চাপানো হয় - যেমন অ্যালফাবেট, মেটা বা অ্যামাজনের মতো মার্কিন কোম্পানি। এই নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন-দালাল স্ট্রিটে চরম অস্থিরতা! হুড়মুড়িয়ে পড়ছে সেনসেক্স-নিফটি, কারণ কী?
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই হুমকির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপ-সহ একাধিক বাণিজ্য সহযোগী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে। বিশেষ করে প্রযুক্তি জগতে বিশ্ব জোড়া প্রতিযোগিতা ও চিনকে ঘিরে বাড়তে থাকা রাজনৈতিক টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ।