জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও হামলার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করার অভিযোগে ভোজপুরী লোকগীতিকার নেহা সিং রাঠোরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। ধর্মীয় পরিচয় জেনে বেছে বেছে জঙ্গি হামলার শিকার হয়েছেন নিরীহ পর্যটকরা। যার জেরে ফুঁসছে গোটা দেশ। এই পরিস্থিততে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিতর্কে জড়িয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী নেহা সিং রাঠোর। (আরও পড়ুন: 'দ্বিজাতি তত্ত্বে' জন্মানো পাকিস্তানে ঠাঁই হয়নি দেশের নাম দেওয়া পঞ্জাবি লেখকেরই!)
আরও পড়ুন-পাকিস্তানে অপেক্ষায় স্বামী! ওয়াঘা সীমান্তে আটকে দেওয়া হল ভারতীয় মহিলাকে
অভয় প্রতাপ সিং নামে এক ব্যক্তি ওই লোকগীতিকারের বিরুদ্ধে লখনউয়ের হজরতগঞ্জ থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। তাঁর দাবি, সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডেলে লোকগীতিকার নেহা সিং রাঠোর একটি বিতর্কিত পোস্ট করেন। ওই পোস্টের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। ভারতে সৌভ্রাতৃত্ব বিঘ্নিত হতে পারে। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই লোকগীতিকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহিতা-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়।অভয় প্রতাপ সিংয়ের অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, নেহা তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করে দেশবিরোধী মন্তব্য করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। (আরও পড়ুন: বন্ধুত্ব নয়, আদতে CPEC-এর জন্যেই ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে চিন?)
নেহা সিং রাঠোর কে?
নেহা সিং হলেন একজন ভোজপুরী গায়িকা। তবে ভোজপুরী গান বললেই যে ধরনের গান মনে পড়ে, তিনি ঠিক সেই ঘরানার সঙ্গীতচর্চা করেন না। ভোজপুরী গান নিয়ে যে চলতি ধারণা রয়েছে, তিনি সেই ধারণা ভেঙে বিপ্লব আনার চেষ্টা করেছেন।তিনি মূলত রাজনৈতিক ব্যঙ্গাত্মক গান এবং লোকসঙ্গীত গান। ১৯৯৭ সালে বিহারে জন্মগ্রহণ করেন নেহা। ২০১৮ সালে কানপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। জানা গেছে, নেহা ২০১৯ সালে ভোজপুরি লোকগানের সুরকার এবং গায়িকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।মোবাইলের মাধ্যমে গান রেকর্ড করে ফেসবুকে আপলোড করতেন তিনি।২০২০ সালের মে মাসে কোভিড লকডাউন চলাকালীন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলেন নেহা। এরমধ্যেই সমাজমাধ্যম প্রভাবী হিসাবে নাম করেছেন নেহা। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে লক্ষ লক্ষ অনুরাগী রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: 'গুলি করুন, কিন্তু দেশ থেকে বের করে দেবেন না', কাতর আর্তি পাকিস্তানির
তবে তার গানের খ্যাতি প্রথম লোকের মুখে মুখে ছড়িয়েছিল বিহারের ভোটের সময়। ২০২০ সালে বিহারের ভোট উপলক্ষে একটি গান বেঁধেছিলেন নেহা। যার শিরোনাম ছিল, ‘বিহার মে কা বা!’ সেই গান রাজনৈতিক দলগুলি বাজিয়েছিল বিহারের ভোটের প্রচারেও। রাতারাতি জনপ্রিয় হয়েছিলেন নেহা। বিহারের ভোটের মতো ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগেও গান বেঁধেছিলেন নেহা। শিরোনাম ছিল ‘ইউপি মে কা বা!’ তবে সেই গানের যেমন প্রশংসা করেছেন রাজনীতিকরা, তেমনই বহু রাজনৈতিক নেতার নিন্দাও শুনতে হয়েছে তাঁকে।পাশাপাশি কানপুর পুলিশের নোটিস পান নেহা। সেই সময়গায়িকার বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। এরপর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে মধ্যপ্রদেশের প্রস্রাবকাণ্ড নিয়ে ব্যঙ্গত্বক পোস্ট করার জন্য নেহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ নিয়েও গান বেঁধেছিলেন নেহা। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে 'এমপি মে কা বা!' গানটি প্রকাশ পায়। যা মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।