পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) কেলেঙ্কারিতে পলাতক হিরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসিকে ভারতে প্রত্যর্পণের বিষয়ে বেলজিয়াম সরকারের সঙ্গে দ্রুত কাজ করছে ভারত সরকার। এই আবহে মেহুলকে ভারতে নিয়ে এলে এখানে তাঁর মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে বেলজিয়ান সরকারকে আশ্বস্ত করেছে মোদী সরকার। মেহুল চোকসিকে বিচারের জন্য দেশে আনার জন্য ভারত তার প্রত্যর্পণের অনুরোধে জানিয়েছে, অভিযুক্তকে পর্যাপ্ত খাবার, ২৪x৭ চিকিৎসা সেবা এবং স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন সুবিধা দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, মেহুল ক্যানসার আক্রান্ত বলে দাবি করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: ট্যারিফ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হারলে টাকা ফেরাতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে?)
আরও পড়ুন: ভারত বিরোধী পোস্ট ফ্ল্যাগ করা উচিত? X-এ প্রশ্ন করে মুখ পুড়ল ট্রাম্পের উপদেষ্টার
এই বছরের শুরুর দিকে বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্পে বসবাস করছিলেন। তিনি সেখানকার রেসিডেন্সি কার্ড পেয়েছিলেন। নিজের স্ত্রী প্রীতি চোকসিকে নিয়ে সেখানে ছিলেন মেহুল। পরে বেলজিয়াম সরকার ভারতের কাছ থেকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পেয়ে ৬৬ বছর বয়সি চোকসিকে অ্যান্টওয়ার্প শহর থেকে গ্রেফতার করেছিল গত ১২ এপ্রিল। সূত্রের খবর, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে মেহুল চোকসির প্রত্যর্পণের জন্য প্রথম বেলজিয়ামের কাছে আবেদন জানায় ভারত। এরপর চলতি বছরের গোড়ায় বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে ফের সেই অনুরোধ পাঠায় সিবিআই। আর এখন মেহুল বেলজিয়ান হেফাজতে। (আরও পড়ুন: কাশ্মীরের কুলগামে এনকাউন্টারে খতম এক জঙ্গি, জখম সেনার JCO)
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর মার্কিন শুল্ক চাপানো নিয়ে মুখ খুললেন ইউক্রেনের জেলেনস্কি, বললেন...
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ভারত থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন চোকসি। পলাতক চোকসি বেলজিয়াম যাওয়ার আগে অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডায় থাকতেন। এদিকে তাঁর স্ত্রী প্রীতি বেলজিয়ামের নাগরিক। সেই সুবাদে সম্প্রতি মেহুল চোকসি 'এফ রেসিডেন্সি কার্ড' পান বেলজিয়ামের। রিপোর্টে অনুযায়ী, ভারতে প্রত্যর্পণ এড়িয়ে বেলজিয়ামে বসবাসের অনুমতি পেতে বিভ্রান্তিকর নথি ব্যবহার করেছিলেন মেহুল চোকসি। বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে জাল নথি জমা দিয়েছিলেন এই পলাতক ব্যবসায়ী। তিনি নাকি তাঁর আগের ভারতীয় এবং অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব গোপন করেছিলেন। এদিকে জানা গিয়েছে, ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন মেহুল। এর আগে ২০২১ সালের মে মাসে অ্যান্টিগা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান চোকসি, কিন্তু পরে তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়। (আরও পড়ুন: 'এত তাড়াতাড়ি ভুলতে বা ক্ষমা...', মোদী-ট্রাম্প 'বার্তা বিনিময়' নিয়ে অকপট শশী)
পিএনবি ১৩,০০০ কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারির মূল অভিযুক্ত মেহুল চোকসি ও তাঁর ভাইপো নীরব মোদী। ২০১৮ সালে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছিল। মুম্বইয়ের ব্র্যাডি হাউস শাখায় এই কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছিল। নীরব মোদী বর্তমানে লন্ডনের জেলে রয়েছেন। ভারত তাঁর প্রত্যর্পণের চেষ্টা করছে। ২০১৯ সালে ইডি ও সিবিআইয়ের অনুরোধে নীরব মোদীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাঁকে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: ভারতের ওপর শুল্ক চাপাক EU,চাইছে US! এরই মাঝে FTA আলোচনার জন্য ভারতে EU কমিশনাররা)
আরও পড়ুন: ফের ভারতের ওপর শুল্ক চাপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা? মুখ খুললেন ট্রাম্প
এদিকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে মুম্বইয়ের একটি বিশেষ আদালত পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের জালিয়াতি মামলায় পলাতক ব্যবসায়ী মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের তদন্তে বড় নির্দেশ দেয়। ২০১৮ সাল থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মেহুলের যে ২,৫৬৫.৯ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল, তা বিক্রি করার অনুমোদন দেয় আদালত। ইডির সহায়তায় পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই রায় দিয়েছিল। ফলস্বরূপ, মুম্বইয়ের ফ্ল্যাট এবং আন্ধেরির এসইপিজেডে গীতাঞ্জলি জেমস লিমিটেডের দুটি কারখানা সহ ১২৫ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি হস্তান্তর করা হয় লিকুইডেটরের কাছে।