জম্মু ও কাশ্মীরের কুলগাম জেলায় সোমবার সকালে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক জঙ্গি নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনী গুদার বনাঞ্চলে ঘেরাও করে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। এরপর জঙ্গিরা নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ানদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে বন্দুকযুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সেই এনকাউন্টারেই এক জঙ্গি নিহত এবং এক জেসিও জখম হয়েছেন। এদিকে অভিযান এখনও জারি আছে বলে জানা গিয়েছে। (আরও পড়ুন: এক্স-এ ভারত বিরোধী পোস্ট ট্রাম্পের উপদেষ্টার, মুখে ঝামা ঘষে দিলেন ইলন মাস্ক)
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর মার্কিন শুল্ক চাপানো নিয়ে মুখ খুললেন ইউক্রেনের জেলেনস্কি, বললেন...
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসীরা নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালালে তল্লাশি অভিযান এনকাউন্টারে পরিণত হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর শ্রীনগরভিত্তিক চিনার কোর জানিয়েছে, অভিযানে এক জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার আহত হয়েছেন। ভারতীয় সেনা, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ এবং সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছে। চিনার কোর টুইট করে বলেছে, 'সতর্ক সেনারা সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে। এরপরই জঙ্গিদের চ্যালেঞ্জ জানায় নিরাপত্তাবাহিনী। এরপরে সন্ত্রাসীরা সেনাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়, যার ফলে ভয়াবহ এনকাউন্টার শুরু হয়। এই সময় একজন সন্ত্রাসীকে হত্যা করা হয় এবং একজন জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার আহত হন। এই অভিযান এখনও চলছে। (আরও পড়ুন: এয়ার ডিফেন্স নেটওয়ার্কে জুড়ছে নয়া রাডার, পাক আকাশসীমায় চলবে কড়া নদরদারি)
আরও পড়ুন: 'এত তাড়াতাড়ি ভুলতে বা ক্ষমা...', মোদী-ট্রাম্প 'বার্তা বিনিময়' নিয়ে অকপট শশী
এর আগে অগস্টে নিরাপত্তা বাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে দীর্ঘতম সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছিল এই কুলগাম জেলারই ঘন জঙ্গলে। লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় আট দিন চলেছিল সেই অভিযান। এদিকে এর আগে গত ৩০ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের গুরেজ সেক্টরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয় মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি বাগু খান ওরফে সমন্দর চাচা। ১৯৯৫ সাল থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সক্রিয় বাগু খানকে জঙ্গি চক্রে 'হিউম্যান জিপিএস' বলা হত। প্রতিরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত তিন দশকে শতাধিক অনুপ্রবেশের চেষ্টার সঙ্গে যুক্ত ছিল বাগু খান। গুরেজ সেক্টরের দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান এবং গোপন পথ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ছিল এই বগু খানের। এই কারণে তার নেতৃত্বে বেশিরভাগ অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টাই সফল হয়েছিল। এ কারণেই প্রতিটি সন্ত্রাসী সংগঠনের কাছে তার বিশেষ গুরুত্ব ছিল। সে প্রথমে হিজবুল কম্যান্ডার হলেও গুরেজ ও সংলগ্ন এলাকা থেকে লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ-সহ সব জঙ্গি সংগঠনকে অনুপ্রবেশে সাহায্য করত। (আরও পড়ুন: ভারতের ওপর শুল্ক চাপাক EU,চাইছে US! এরই মাঝে FTA আলোচনার জন্য ভারতে EU কমিশনাররা)
এর আগে গত ১৩ অগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের উরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছিল সেনা। উত্তর কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলার উরির চুরুন্ডা এলাকায় সেই অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল জঙ্গিরা। তার আগে, গত ৩০ জুলাই জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা বানচাল করে সেনা। সেই সময় পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার দুই সন্ত্রাসী নিহত হয়েছিল।
এদিকে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে সব জঙ্গি ঘাঁটি ভারত গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, সেগুলি ফের নতুন করে গড়তে শুরু করেছে সন্ত্রাসবদী সংগঠনগুলি। এতে পাক সরকারও সহায়তা করছে তাদের। এরই মাঝে ফের একবার অনুপ্রবেশের চেষ্টা শুরু করেছে পাকিস্তানি জঙ্গিরা। ভারত অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, অপারেশন সিঁদুর এখন শেষ হয়নি। এরপর থেকে কোনও জঙ্গি হামলা হলে তা সরাসরি পাকিস্তানের যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে গণ্য করা হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।