দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টার মতে, ভারতের উপর আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্কের জেরে ২০২৬ অর্থবছরে ভারতের জিডিপি অর্ধ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। তবে যদি এই ৫০ শতাংশ শুল্ক আগামী অর্থবছরেও জারি থাকে, তাহলে তা তা ভারতের অর্থনীতির জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। সোমবার ব্লুমবার্গ টিভির হাসলিন্দা আমিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাগেশ্বরন বলেন, 'আমি আশা করি অতিরিক্ত জরিমানা শুল্ক একটি স্বল্পস্থায়ী ঘটনা। এই আর্থিক বছরে এর প্রভাবে ভারতের জিডিপির ০.৫ শতাংশ থেকে ০.৬ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। এটি কতদিন স্থায়ী হবে তার উপর নির্ভর করবে এই হার।' (আরও পড়ুন: ফের ভারতের ওপর শুল্ক চাপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা? মুখ খুললেন ট্রাম্প)
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর শুল্ক চাপাক EU,চাইছে US! এরই মাঝে FTA আলোচনার জন্য ভারতে EU কমিশনাররা
এরপর তিনি বলেন, যদি এই শুল্কের অনিশ্চয়তা আগামী অর্থবছর পর্যন্ত প্রসারিত হয়, তবে এর প্রভাব আরও বেশি হতে পারে, যার জেরে ভারতের জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি হবে।' নাগেশ্বরন বলেন, ২০২৬ সালের মার্চে শেষ হওয়া অর্থবছরের জন্য সরকারের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৩-৬.৮% বজায় রাখবে। এর মধ্যে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৮%, যা এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে দ্রুততম। এদিকে দেশের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বলেছেন, গত সপ্তাহে ঘোষিত ভারতের জিএসটি সংস্কার ভারতের অর্থনীতির জন্য উল্লেখযোগ্য হতে চলেছে। এরই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি আট বছরের সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। এই বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে ভারতের অর্থনীতির জন্য। সরকার এই বছর তার রাজস্ব ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা ৪.৪% পূরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে বলে জানান নাগেশ্বরন। (আরও পড়ুন: ট্যারিফ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে হারলে টাকা ফেরাতে হবে ট্রাম্প প্রশাসনকে?)
আরও পড়ুন: ভারত বিরোধী পোস্ট ফ্ল্যাগ করা উচিত? X-এ প্রশ্ন করে মুখ পুড়ল ট্রাম্পের উপদেষ্টার
এদিকে গতকালই আমেরিকার রাজস্ব সচিব স্কট বেসেন্ট এই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আর তার ঘণ্টা কয়েক পরই শুল্ক নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সংক্ষিপ্ত জবাবে বলেন, 'হ্যাঁ, আমি প্রস্তুত (আরও শুল্ক চাপানোর জন্য)।' তবে এর থেকে বিস্তারিত ভাবে তিনি আর কিছু বলেননি। প্রসঙ্গত, এর আগে আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। ওয়াশিংটন দাবি করেছিল, ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনছে বলেই এই 'নিষেধাজ্ঞামূলক শুল্ক' চাপানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তি, ভারত রশিয়ার থেকে তেল কিনছে বলেই পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থ পাচ্ছেন। (আরও পড়ুন: 'পর্যাপ্ত খাবার, ২৪x৭ চিকিৎসা...', মেহুলকে দেশে ফেরাতে বেলজিয়ামকে আশ্বাস ভারতের)
এই আবহে গতকাল বেসেন্ট বলেন, 'আমরা এখন একটা প্রতিযোগিতায় আছি, ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী কতক্ষণ টিকতে পারবে বনাম রাশিয়ার অর্থনীতি কতক্ষণ টিকতে পারবে? যদি আমেরিকা এবং ইইউ এক যোগে রাশিয়ান তেল কেনা দেশগুলির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা, আরও পরোক্ষ শুল্ক আরোপ করতে পারে, তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়বে। তাহলে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসবেন।'