'সীমান্তে এখনও অপারেশন সিঁদুর চলছে।' এমনটাই জানিয়েছেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান। দিল্লির প্রতিরক্ষা সেমিনার মঞ্চ থেকে জেনারেল অনিল চৌহান স্পষ্ট জানালেন, সেনার প্রস্তুতি থাকা উচিত ২৪x৭, ৩৬৫ দিন।আর এই যুদ্ধ শুধুই অস্ত্রে নয়, জ্ঞানে সজ্জিত সৈনিকই আগামী দিনের লড়াইয়ে সাফল্যের চাবিকাঠি। তাঁর কথায়, ‘শাস্ত্র’ (যুদ্ধের প্রক্রিয়া), ‘শাস্ত্রা’ (জ্ঞান) হল চাবিকাঠি।
সিডিএস বলেন, 'আমরা দাঁড়িয়ে আছি সামরিক কৌশলের তৃতীয় বিপ্লবের দোরগোড়ায়।' তাঁর কথায়, নতুন যুগের যুদ্ধ যেখানে কাইনেটিক ও নন-কাইনেটিক উপায় একসঙ্গে মিশে যাচ্ছে। তিন স্তরের যুদ্ধবিদ্যা-ট্যাকটিক্যাল, অপারেশনাল ও স্ট্র্যাটেজিক-প্রতিটি স্তরে দক্ষ হওয়াই আজকের সেনার অপরিহার্য চ্যালেঞ্জ।তিনি আরও বলেন, 'শুধু শস্ত্র নয়, ‘শাস্ত্র’ জ্ঞান সমান গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক যোদ্ধার কাছে এই দুইয়ের মিশেলই অনিবার্য।'
এর আগে রাজ্যসভায় প্রশ্নের লিখিত জবাবে বৃহস্পতিবার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তি বর্ধন সিং বলেন, 'ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল ফোকাসড, মেজারড এবং নন-এসক্যালেটরি। আন্তর্জাতিক চাপ নয়, অপারেশনের নেপথ্যে ছিল দেশের প্রতিরক্ষা কৌশল।' তিনি আরও বলেন, 'পাকিস্তান উস্কানিমূলক পদক্ষেপের জবাবে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর কাছ থেকে জোরালো প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। যার ফলে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। পরবর্তীকালে ১০ মে ২০২৫, পাকিস্তানের ডিজিএমও ভারতের ডিজিএমও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে গুলিবর্ষণ এবং সামরিক কার্যকলাপ বন্ধের অনুরোধ করেন।তারপরেই ভারত সংঘর্ষ বিরতিতে সম্মত হয়।'
অপারেশন সিঁদুর
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলায় নিরীহ ২৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের ভাষায়, 'পাকিস্তান-প্রযোজিত' এই বর্বরতার জবাবে ৭ মে শুরু হয় ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’। লক্ষ্য ছিল, সীমান্তের ওপারে থাকা সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিকে চিরতরে ধ্বংস করা।ভারতের টার্গেট করা স্ট্রাইক-এ ধ্বংস হয় পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি পরিকাঠামো। যারা ছিল জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিন-এর মতো সংগঠনের অধীন। নিকেশ হয় ১০০-রও বেশি জঙ্গি।এরপরেই পাকিস্তানের পাল্টা হামলা চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। ভারতের বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ আক্রমণ প্রতিহত করে। সীমান্তে উত্তেজনার মাঝে পাকিস্তান ভারতীয় বেসামরিক এলাকা ও সেনা ঘাঁটিকে নিশানা করার চেষ্টা করলে, ভারত পাল্টা হামলায় পাকিস্তানের বিমানঘাঁটি ও সামরিক অবকাঠামোয় আঘাত হানে।৪ দিনের তীব্র সংঘাতের পর ১০ মে ভারতের ডিজিএমও-র সঙ্গে পাকিস্তানের ডিজিএমও যোগাযোগ করে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেন। এরপরেই ভারত সম্মত হয়। শুরু হয় দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি।