আজকের এই দ্রুতগতির জীবনে কাজের চাপ, প্রযুক্তির নির্ভরতা আর ব্যক্তিগত দায়িত্বের কারণে অনেকেই বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্ব অনুভব করছেন। আগে যেখানে দেখা হওয়া বা কথোপকথন ছিল নিয়মিত, এখন তা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে কিছু লাইক আর ছোট ছোট বার্তায়। এই একাকীত্ব ধীরে ধীরে প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যেও। কিন্তু এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে কীভাবে নিজেকে ভালো রাখা যায়, সেটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন - Emotional Dumping: না চাইতেও বেফাঁস মনের আবেগ! কীভাবে কাটাবেন ইমোশনাল ডাম্পিং? জেনে নিন
ব্যস্ততার মধ্যেও কীভাবে ভালো রাখবেন নিজেকে?
১. নিজের সঙ্গে সময় কাটান: প্রতিদিন অন্তত কিছুটা সময় একান্ত নিজের জন্য রাখুন। বই পড়া, গান শোনা, হাঁটাহাঁটি অথবা ধ্যান—এই কাজগুলো মানসিক প্রশান্তি দেয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
২. আগ্রহের বিষয় খুঁজে নিন: আপনার আগ্রহ কোথায় সেটা খুঁজে বার করুন। ছবি আঁকা, রান্না, গিটার বাজানো কিংবা নতুন কিছু শেখা—এইসব অভ্যাস আপনাকে ব্যস্ত রাখবে এবং মানসিক প্রশান্তি দেবে। কোনও বুক ক্লাব বা সাপ্তাহিক কোর্সে যুক্ত হতে পারেন।
৩. যোগাযোগ বজায় রাখুন: বন্ধুদের সময় না দিতে পারলেও ছোট্ট একটি বার্তা বা ফোনকল সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সহায়ক হতে পারে। এমনকি পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করতেও দ্বিধা করবেন না। ছুটি পেলেই চেষ্টা করুন তাদের সঙ্গে দেখা করার। ব্যস্ত থাকলেও আপনি যে তাদের ভুলে যাননি ছোট ছোট চেষ্টার মধ্যে দিয়ে তা জানান। একান্তই দেখা করার সময় না পেলে আপনার বন্ধুকে বলুন কাজ করার সময় ভিডিয়ো কলে বা ফোন কলে থাকতে। কথা না বললেও পরস্পরের জন্য উপস্থিত থাকাও একটি ভালো অভ্যাস।
৪. সামাজিক কাজে অংশ নিন: কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া বা পাড়া-এলাকার ছোটখাটো কাজে অংশগ্রহণ করলে নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে যা একাকিত্ব কাটাতে সাহায্য করবে। একা থাকতে থাকতে আমরা অনেক সময়ই খিটখিটে হয়ে পড়ি। এই ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে মন সতেজ থাকে ও সহমর্মিতা বজায় থাকে।
৫. মন খুলে কথা বলুন: কখনও কখনও নিজের অনুভূতিগুলো কাউকে মন খুলে বলাই সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হতে পারে, এর কোনও বিকল্প নেই। যদি একাকিত্ব অসহনীয় হয়ে ওঠে, যদি মনে হয় আপনি ধীরে ধীরে অবসাদের দিকে চলে যাচ্ছেন তবে দেরি না করে কোনও পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।
আরও পড়ুন - ত্বক দিয়ে তৈরি হল ছিন্নবিচ্ছিন্ন মুখ! ফিনিক্সের মতোই প্রাণ ফিরল বাংলাদেশি যুবকের
জীবনের গতি যতই ব্যস্ত হোক না কেন, নিজের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা সবচেয়ে জরুরি। বন্ধুদের সংখ্যা কমলেও, নিজের আত্মিক শান্তি বজায় রাখাই আসল চাবিকাঠি। তাই সময়ের সঙ্গে বদল হলেও নিজের ভালো থাকার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাধারণ জ্ঞানের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে লেখা কথার ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ না করার অনুরোধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য নিয়ে যে কোনও প্রশ্ন, যে কোনও সমস্যার সমাধানের জন্য চিকিৎসক বা পেশাদার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।