যখন সলমন খান এবং এআর মুরগাদোস ‘সিকন্দর’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করা নিয়ে প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। ২০০৮ সালে ‘গজনি’ ছবিতে আমির খানকে প্রথম বড় সাফল্য এনে দেওয়া এই চলচ্চিত্র নির্মাতা সলমনের পরপর ফ্লপ দেওয়ার যে শনির দশা চলছে, তা বুঝি এবারে বদলাবে। তবে সমালোচকদের কাছে সেভাবে প্রশংসা পায় না ছবিখানা। ব্যর্থ হয় বক্স অফিসেও।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে, পরিচালক মুরগাদোস সলমনের সঙ্গে ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। এবং দাবাং খানের সঙ্গে কাজ করা ‘সহজ ছিল না’ বলে উল্লেখ করেছেন।
যদিও সলমনের অনুরাগীরা মোটেও এই মন্তব্যকে ভালোভাবে নেননি। বরং অভিনেতার উপর দোষারোপ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন এবং এআর মুরগাদোসের সমালোচনায় পঞ্চমুখ সকলে।
সম্প্রতি ভালাইপেচু ভয়েস-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, মুরগাদোস ‘সিকন্দর’ ছবির শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘একজন তারকার সঙ্গে শুটিং করা সহজ নয়। দিনের দৃশ্যও রাতে শুট করতে হয়, কারণ তিনি রাত ৮ টার আগে সেটে আসেন না। আমরা সকাল থেকেই শুটিং করার অভ্যস্ত, কিন্তু সেখানে এমনটা হয় না’।
‘যদি কোনো দৃশ্যে চারটি বাচ্চা থাকে, তাহলে আমাদের তাদের সঙ্গে রাত ২টোয় শুটিং করতে হবে, এমনকী যদি তাদের স্কুল থেকে ফেরার দৃশ্য হয়! সেই সময় তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং স্বাভাবিকভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে।’, আরও বলেন মরগাদোস।
সলমন খানের অনুরাগীদের প্রতিক্রিয়া
অভিনেতার অনুরাগীরা টুইটারে এআর মুরগাদোসের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। এমনকী, পরিচালকের এমন মন্তব্যকে তাঁরা সলমন খানের উপর আক্রমণ বলেই মনে করছেন। একজন লিখেছেন, ‘#ARMurugadoss তার ব্যর্থতা স্বীকার করেন না। অভিনেতার বিরুদ্ধে তার দাবিগুলি কিছুটা সত্য হলেও, পরিচালক হিসেবে আপনি প্রোজেক্টের নেতা। যদি আপনি আপনার অভিনয়শিল্পীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব আপনার উপরেই বর্তায়। প্রযোজক, পরিচালক এবং প্রধান অভিনেতা সকলেই দায়ী।’
আরেকজন যোগ করেছেন, ‘একজন ভালো পরিচালক অন্যদের দোষারোপ করার পরিবর্তে ব্যর্থতাকে স্বীকার করবেন। আমি #ARMurugadoss-এর উপর অত্যন্ত হতাশ, যিনি #Salmankhan-কে ছবির ব্যর্থতার জন্য দোষারোপ করছেন.. সলমন ভাই কি স্ক্রিপ্ট, অ্যাকশন সিকোয়েন্স, VFX লিখেছিলেন? সেটা করেছে প্রোডাকশন টিম এবং আপনি, এটা স্পষ্টতই আপনার ভুল।’
অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে মুরগাদোস রজনীকান্তের মতো সুপারস্টারদের সঙ্গেও ব্যর্থ বা নিম্নমানের ছবি দিয়েছেন। ‘সিকন্দর কাজ করেনি #Salman দায়ী। দারবার কাজ করেনি #Rajinikanth দায়ী। Emns @ARMurugadoss-এর কাছে, অভিনেতাদের দোষারোপ করা সহজ ভালো গল্প তৈরির চেয়ে।’
চলচ্চিত্র নির্মাতার বক্স অফিস রেকর্ড বিশ্লেষণ করে, একটি টুইটে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কোন সন্দেহ নেই যে সলমন সিকন্দরে খুব খারাপ ছিলেন, কিন্তু স্ক্রিপ্ট এত খারাপ এবং পরিচালনা এত নোংরা ছিল যে ছবিটি ডি নিরো এবং লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওরা থাকলেও ব্যর্থ হত। তাই সব দোষ শুধুমাত্র সলমনের উপর চাপানোর কোনো অর্থে হয় না! মুরগাদোস নিজেই গত ১১ বছর ধরে হিটের জন্য সংগ্রাম করছেন।’
একজন অনুরাগী টুইট করেছেন, ‘যদি টম ক্রুজ প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করতেন, তবুও এই ছবিটি ব্যর্থ হত, কারণ এতে কোনো আনন্দ ছিল না।আসল কথা হল আপনি পরিচালক হিসেবে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই #SalmanKhan-কে দোষারোপ করা বন্ধ করুন এবং এগিয়ে যান।’
নয় বছর পর মুরগাদোস হিন্দি সিনেমায় ফিরেছিলেন সিকন্দর দিয়ে। সলমন ছাড়াও ছবিতে রশ্মিকা মন্দান্না, কাজল আগরওয়াল, সাথিয়ারাজ, শর্মন জোশি এবং প্রতীক বব্বর অভিনয় করেছেন। কিন্তু বিশাল বাজেট এবং বড়-বড় তারকা থাকা সত্ত্বেও, ‘সিকন্দর’ দর্শকদের কাছে সাফল্য পায়নি। প্রায় ২০০ কোটি টাকা বাজেটে নির্মিত এই ছবিটি বিশ্বব্যাপী মাত্র ১৮৫ কোটি টাকা আয় করেছে।