গত ১০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যভবন সাফাই অভিযানের ডাক দিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। স্বাস্থ্যভবনের সামনে রাস্তায় বসেই চলে প্রতিবাদ। তারপর নানান টানাপড়েন, একাধিকবার বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জুনিয়র ডক্টররা। সেখানে ৫ দফার মধ্যে ৩ দফা দাবি আদায় হয়। এরপর ফের নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে জুনিয়র ডক্টরদের বৈঠক হয়। যদিও সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি বলেই দাবি করেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
শেষপর্যন্ত ১৯ সেপ্টেম্বর জুনিয়র ডক্টররা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আংশিক ভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছেন তাঁরা। সেই ঘোষণা মতো, এদিন বিকেলে স্বাস্থ্য ভবনের সামনের ধর্না তুলে নিয়ে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতর অভিযানে নামেন ডাক্তারেরা। যদিও আন্দোলন যে বন্ধ হচ্ছে না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন জুনিয়র ডক্টররা।
তবে স্বাস্থ্যভবনের সামনে চলা আন্দোলন চলাকালীন জুনিয়র ডক্টররা প্রতিদিনই বহু মানুষকে পাশে পেয়েছেন। তাঁরা পেয়েছেন এরাজ্যের বহু মানুষের সমর্থন, ভালোবাসা, আশীর্বাদ। এমনকি বহু শিল্পীও বিভিন্ন দিনে, বিভিন্ন সময়ে গিয়েছেন তাঁদের পাশে দাঁড়াতে।
আন্দোলনের শেষ দিনে অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে স্বাস্থ্যভবনের ধর্না মঞ্চে পৌঁছে গিয়েছিলেন ‘চন্দ্রবিন্দু’ ব্যান্ডের উপল সেনগুপ্ত। ডাক্তারদের প্রতিবাদী মাইক হাতে নিয়ে উপল গাইলেন, ‘ঐ উজ্জ্বল দিন, ডাকে স্বপ্ন রঙীন/ ছুটে আয় রে লগন বয়ে যায় রে মিলন বীন, ওই তো তুলেছে তান – শোনো ওই আহ্বান/ ঐ উজ্জ্বল দিন, ডাকে স্বপ্ন রঙীন, ছুটে আয় রে লগন বয়ে যায় রে মিলন বীন, ওই তো তুলেছে তান – শোনো ওই আহ্বান।’ উপলের সঙ্গে গলা মেলাতে দেখা গেল বহু জুনিয়র ডক্টরকেও। সেই মুহূর্তটিই উঠে এসেছে ডক্টর অভিনব পালের X-হ্যান্ডেলে।
এদিকে জুনিয়র ডক্টরদের কর্মবিরতি চলছিল গত ১০ অগস্ট থেকে। পূর্ব ঘোষণা মতোই, ২০ সেপ্টেম্বর আংশিক ভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। এদিন সন্ধ্যায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতর অভিযান শেষে আরজি কর হাসপাতালে ফিরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন আন্দোলনকারীরা। তাঁরা পাশে থাকার জন্য সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান। তাঁদের দাবি, ২৭ সেপ্টেম্বরের সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে নজর থাকবে তাঁদের। পাশাপাশি হাসপাতালে হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য সরকারের উপরে চাপ বজায় রাখবেন বলেও জানাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। জরুরি পরিষেবায় ফিরলেও, অভয়ার বিচারের জন্য আন্দোলন চলবে, জানিয়েছেন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকেরা।