ভিডিয়ো: অস্ট্রেলিয়া মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও মিচেল স্টার্কের স্ত্রী অ্যালিসা হিলি সেই ভয়াবহ রাতের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যেদিন ধর্মশালায় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের আইপিএল ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
PBKS vs DC ম্যাচ স্থগিত হওয়ার পরে কী ঘটেছিল? অভিজ্ঞতা জানালেন মিচেল স্টার্কের স্ত্রী (ছবি- এক্স)
অস্ট্রেলিয়া মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও মিচেল স্টার্কের স্ত্রী অ্যালিসা হিলি সেই ভয়াবহ রাতের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন, যেদিন ধর্মশালায় পঞ্জাব কিংস বনাম দিল্লি ক্যাপিটালসের আইপিএল ম্যাচ মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য সবটাই নিরাপত্তাজনিত কারণে হয়েছিল। তখন বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (BCCI) জানিয়েছিল, স্টেডিয়ামের লাইটে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে ম্যাচ বন্ধ হয়েছে। তবে বাস্তবে, ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় ধর্মশালার আশেপাশের এলাকায় এয়ার সাইরেন বেজে ওঠে, যার জেরে প্রথমবারের মতো নিরাপত্তাজনিত কারণে একটি IPL ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
ম্যাচে পঞ্জাব কিংস (PBKS) করে ছিল ১০.১ ওভারে ১২২/১ রান। তখন একটি লাইট টাওয়ার নিভে যায়, এরপর একে একে আরও টাওয়ার নিভে যায় এবং খেলোয়াড়দের মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। IPL চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল দর্শকদের শান্তিপূর্ণভাবে স্টেডিয়াম ছাড়ার নির্দেশ দেন। ধর্মশালায় সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়।
হিলি, যিনি সেই সময় স্ট্যান্ডে ছিলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের অন্যান্য খেলোয়াড়দের পরিবারের সঙ্গে, The Willow Talk Podcast-এ জানিয়েছেন সেই রাতের অভিজ্ঞতা, ‘অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা ছিল। হঠাৎ কিছু লাইট টাওয়ার নিভে যায়, আর আমরা তখন উপর থেকে সব দেখছিলাম। আমাদের একটা বড় গ্রুপ ছিল — পরিবার ও অতিরিক্ত সাপোর্ট স্টাফ। এমন সময়, আমাদের যে ব্যক্তি সাধারণত বাসে তুলে নেন, তিনি এলেন, মুখ ছিল একেবারে ফ্যাকাশে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একটা ঘরে ঢোকানো হয়, পরে গাড়িতে তোলা হয় – ডু প্লেসি তখনও জুতো পরেননি।’ হিলি বলেন, তিনি যখন ড্রেসিং রুমে পৌঁছান, ফ্যাফ ডু প্লেসির পায়ে তখনও জুতো ছিল না। এরপর তিনি স্বামী মিচেল স্টার্ককে জিজ্ঞেস করেন কী ঘটছে।
তিনি বলেন, ‘মিচ বলল, ‘তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে’। এরপর আরেকজন এলেন, তিনিও ফ্যাকাশে মুখে একটা শিশুকে নিয়ে বললেন, ‘এখনই বেরোতে হবে’। আমরা কিছুই জানতাম না। আমাদের একটা ঘরে ঢোকানো হল, যেন একটা হোল্ডিং এরিয়া। সব খেলোয়াড়রা সেখানে ছিলেন। সকলেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। মিচ বলল, ৬০ কিমি দূরের একটা শহরে মিসাইল আঘাত করেছে। তাই ব্ল্যাকআউট করা হয়েছে, কারণ তখন ধর্মশালা স্টেডিয়াম যেন একটা ‘বীকন’ হয়ে উঠেছিল। এরপর আমাদের গাড়িতে তোলা হল আর হোটেলে ফিরিয়ে আনা হল।’
এরপরে তিনি বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে যাচ্ছিলাম, পাকিস্তান সীমান্তের দিকে, যা আরও ভয়ের ছিল। আমি আর মিচ অনেক 'কল অফ ডিউটি' খেলেছি, তাই পথের ধারে সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সাইটগুলো দেখে চিনতে পারছিলাম। এক গ্রামের কেউ দিনের বেলায় বাজি ফাটালো — সকলেই থেমে গেল, চারপাশ তাকাল — যেন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে! পরে দেখি বাজি উঠছে, আশা করি সেটা একটা বিয়ে ছিল এবং তাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক — কিন্তু সময়টা একদম ভালো ছিল না।’
মিচেল স্টার্কের স্ত্রী অ্যালিসা হিলি আরও বলেন, ‘আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছিল, আমরা ঠিক থাকবো কারণ সরাসরি লাইনে ছিলাম না। নিরাপত্তায় জলন্ধর পৌঁছে, এরপর দিল্লি।’ খেলোয়াড়, পরিবার, সাপোর্ট স্টাফ ও সম্প্রচারকারীদের ধর্মশালা থেকে জলন্ধর পর্যন্ত ছোট ছোট প্রায় ৪০-৫০টি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্য দিয়ে হোশিয়ারপুরে পৌঁছালে পঞ্জাব পুলিশ দায়িত্ব নেয়, এবং সেখান থেকে জলন্ধরে পৌঁছে ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এ করে দিল্লি পাঠানো হয়।