বাংলা নিউজ > ক্রিকেট > Champions Trophy: অপয়া নন শামি! বুমরাহর না থাকা প্রমাণ করল, ভারত এখন ‘আত্মনির্ভর’… ওয়ান ম্যান শো নয়, দলগত সংহতিই আসল
পরবর্তী খবর
Champions Trophy: অপয়া নন শামি! বুমরাহর না থাকা প্রমাণ করল, ভারত এখন ‘আত্মনির্ভর’… ওয়ান ম্যান শো নয়, দলগত সংহতিই আসল
2 মিনিটে পড়ুন Updated: 10 Mar 2025, 10:15 AM ISTMoinak Mitra
ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয়ে বুঝিয়ে দিল দলগত সংহতির ওপর কিছুই নয়। তাই বুমরাহর না থাকাও প্রভাব ফেলল না।
Ad
অপয়া নন শামি! বুমরাহর না থাকা প্রমাণ করল, ভারত এখন ‘আত্মনির্ভর’… কোন স্ট্র্যাটেজিতে পাঁচে পাঁচ ভারতের? ছবি- এইচটি প্রিন্ট
ভারতীয় দল এবারের ICC Champions Trophyতে খেলেছে পাঁচটিতে, আর জিতেছে পাঁচটি ম্যাচেই। প্রত্যয়ীভাবেই রবিবার দুবাইয়ে তৃতীয়বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতল ভারত। আইসিসির সব ইভেন্ট মিলিয়ে এটি ভারতের সপ্তম ট্রফি। এর আগে জোড়া টি২০ বিশ্বকাপ, জোড়া ওডিআই বিশ্বকাপ এবং দুবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল ভারত। ২০০২ সালে যুগ্মভাবে এবং ২০১৩ সালে এককভাবে।
শুরুটা খারাপ হলেও এখন দৌড়াচ্ছে রোহিত-গৌতি জুটি
রোহিত শর্মা-গৌতম গম্ভীর ম্যানেজমেন্ট যুগের শুরুটা অগাস্টে শ্রীলঙ্কায় হয়েছিল, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ০-২ ব্যবধানে হেরে। এরপর নিউজিল্যান্ডের কাছে ঘরের মাঠে ০-৩ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজে হারের পর গেল গেল রব উঠে গেছিল। আর তারপর পাঁচ টেস্টের সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১-৩ ব্যবধানে পরাজয়ের পরে বিরাট-রোহিতদের কেরিয়ারও কার্যত খাদের কিনারায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নিন্দুকরা। যদিও তাঁরা আসল সময়ই জ্বলে উঠলেন, বোঝালেন জিনিয়াসরা কঠিন পরিস্থিতি ছেড়ে পালিয়ে যান না।
বুমরাহর চোট, শামির কামব্যাক নিয়ে প্রশ্ন ছিল-
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ঘুরে দাঁড়ানোর খুব বেশি সময় ছিল না ভারতের হাতে। নিজেদের রণকৌশল ঠিক করতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল রোহিত শর্মার ভারত। আর সেটা করতে হয়েছে ভারতের সেরা অল-ফরম্যাট বোলার জসপ্রীত বুমরাহকে ছাড়াই। কিন্তু তাতেও ভারতের পারফরমেন্সে কোনও প্রভাবই পড়়নি। বারবারই এই প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছিল, বুমরাহর শূন্যস্থান পূরণ করবে কে?
সঠিক স্ট্র্যাটেজি আর দায়িত্ববোধেই বাজিমাত-
ভারতীয় দল অবশ্য দেখিয়ে দিয়েছে তাঁদের স্ট্র্যাটেজি যেমন অন্যান্য দলের তুলনায় অনেক এগিয়ে। আবার রিজার্ভ বেঞ্চও অনেক বড় বড় দলের থেকেও বেশি নির্ভরতায় ঠাসা। অর্থাৎ আসল সময় যারা জ্বলে উঠতে পারেন। তাই স্রেফ বসে বসেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে ফেললেন গত টি২০ বিশ্বকাপজয়ী দলের ভারতের অন্যতম সেরা বোলার আর্শদীপ সিং। বুমরাহর অনুপস্থিতিতেও তাঁকে নামতে হল না। শামির সঙ্গে স্পিনাররাই দেখে নিলেন বিষয়টা। এতটাই দায়িত্ববোধ রয়েছে ক্রিকেটারদের মধ্যে।
ভারতের বোলিং বিভাগ অপ্রস্তুত ছিল
তবে কাজটা এত সহজে সম্ভব হতো না। টুর্নামেন্টের আগে ভারতের বোলিং ছিল একদমই অপ্রস্তুত। মহম্মদ শামি গোড়ালিতে অস্ত্রোপচারের পরে শেষ ১৫ মাসে মাত্র দুটি ওয়ানডে খেলেছিলেন। নভেম্বরে স্পোর্টস হার্নিয়ার সমস্যা কাটানোর জন্য অস্ত্রোপচারের পর কুলদীপ যাদবের। শামির সতীর্থ পেস পার্টনার আর্শদীপ সিং ও হর্ষিত রানার ওডিআই অভিজ্ঞতা যথাক্রমে ৯ ও ৩টি। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ মন্থর ও স্পিনবান্ধব হবে বলে ভারতের বিশ্বাস ছিল, তাই দেরিতে হলেও বরুণ চক্রবর্তীর অন্তর্ভুক্তিই যেন ভারতের বোলিং অ্যাটাককে পুরো জমাট করে দেয়।
৫ ম্যাচে ৪৭ উইকেট নিয়েছে ভারত
এত থাকা-না থাকার মাঝেও পাঁচ ম্যাচে ৪৭ উইকেট নিয়েছে ভারত। নিজেদের প্রথম চার প্রতিপক্ষকে অলআউট করেছে তারা। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভালো ব্যাটিং পিচে তারা সবচেয়ে বেশি রান হজম করেছিল ২৬৪। শামি ৯ উইকেট নেন, বরুণের ঝুলিতেও ৯টি উইকেট। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালে কুলদীপ দুর্দান্ত স্পেলে নেন কেন উইলিয়ামসন এবং রাচিন রবীন্দ্রর উইকেট। স্পিনার অক্ষর প্যাটেল এবং রবীন্দ্র জাদেজা কৃপণ বোলিং করেন।
ভারতের ডিপ ব্যাটিং অর্ডার
ভারতীয় দলের এই পারফরমেন্সের আরও এক কারণ ডিপ ব্যাটিং অর্ডার। ৮ নম্বর পর্যন্ত প্রপার ব্যাটাররাই খেলতে নামছেন, এর থেকে ভালো একটা দলের জন্য আর কি বা হতে পারে? বিরাট পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে দুরন্ত ইনিংস খেলেন। রোহিত ফাইনালে ঠিক জ্বলে উঠলেন। শ্রেয়স গোটা প্রতিযোগিতা জুড়েই অত্যন্ত সংযমি ইনিংস খেলেছেন, তিনি ভারতের এই প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ রানের মালিক। লোকেশ রাহুলও পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই দলকে ঠান্ডা মাথায় জিতিয়েছেন, ফলে পন্ত সুযোগই পাননি।
অলরাউন্ডার হার্দিকের পারফরমেন্স-
একই সঙ্গে আরেকজনের কথা না বললেই নয়, তিনি হার্দিক পাণ্ডিয়া। দলের দরকারে তাঁকে সেকন্ড স্পেশালিস্ট পেসার হিসেবে বোলিং যেমন করতে হয়েছে তেমনই অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ব্যাটিংয়েও আসতে হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সময়। আর তিনি কিন্তু দলকে ডোবাননি। নিজের কাজ ঠিকঠাকই পালন করে গেছেন।
রোহিতের ব্যাটিং স্টাইলে বদল
এছাড়াও ম্যাচ শেষে রোহিত বলছিলেন কাউকে একটা দায়িত্ব নিতেই হয় সামনে থেকে অ্যাটাক করার। সাম্প্রতিক সময় সেই কাজটা করতেই নিজের খেলার স্টাইলে বদল এনেছেন তিনি। আর সেটা করায় দল যেহেতু সাফল্য পাচ্ছে, তাই তিনি সেটার থেকে আর বেরতে চাননা। সব মিলিয়ে দলগত সংহতিই ভারতীয় দলকে জিতিয়ে দিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আর বুঝিয়ে দিল বুমরাহ নয়, টিম ইন্ডিয়ার ১১জনের ১১জনই স্টার।