ভোরবেলায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে মদ্যপান করছিলেন কয়েকজন যুবক-যুবতী। সেই দৃশ্য দেখে আপত্তি জানান এক অঙ্কন শিক্ষক। অভিযোগ, প্রতিবাদ করাতেই উল্টে তাঁর উপর চড়াও হয় ওই যুবক যুবতীর দল। প্রকাশ্য রাস্তায় চলে বেধড়ক মারধর। গুরুতর জখম হন ওই শিক্ষক। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কামারহাটি পুরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নন্দননগর এলাকায়।
আরও পড়ুন: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে মারধর, চাঞ্চল্য
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির নাম নিরুপম পাল। পেশায় তিনি একজন অঙ্কন শিক্ষক। শনিবার ভোর ৬টা নাগাদ একটি কালীপুজোর নিমন্ত্রণ শেষে তিনি নন্দনপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন। ফেরার পথে রাস্তার ধারে চার জন যুবক ও এক যুবতীকে মদ্যপান করতে দেখতে পান। নিরুপমবাবু বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানাতেই শুরু হয় ঝামেলা। অভিযোগ, একসঙ্গে পাঁচ জন মিলে তাঁকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
শিক্ষকের দাবি, মত্ত ওই যুবক-যুবতীরা তাঁকে ঘিরে কিল-ঘুসি ও লাথি মারতে থাকে। মারধরে তাঁর নাক-মুখ ফেটে যায়, চোখেও আঘাত পান। বুকেও প্রচণ্ড আঘাত লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, তিনি প্রতিবাদ না করলে হয়তো আজও কেউ ওদের আটকাত না। কিন্তু কথা বলতেই তাঁর উপর চড়াও হয়। যদি স্থানীয় মানুষজন না বাঁচাতেন, তাহলে তিনি রাস্তাতেই প্রাণ হারাতেন।
এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এলাকার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে মারধরের পুরো দৃশ্য। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন যুবক একসঙ্গে ওই শিক্ষককে ঘিরে মারধর করছে। এমনকি এক যুবতীকেও ওই ঘটনায় অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। যদিও ফুটেজটির সত্যতা এখনও পুলিশ এখনও যাচাই করেনি। তবে ভিডিয়ো দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন নিরুপমবাবু। আক্রান্ত শিক্ষকের আশঙ্কা, ভবিষ্যতেও তাঁকে লক্ষ্য করে হামলা হতে পারে। তাই তিনি বেলঘরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রাও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁদের এক জন বলেন, এই এলাকায় এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি। যারা মদ্যপান করছিল, মনে হচ্ছে তারা বাইরের লোক। আজ একজন শিক্ষক আক্রান্ত হয়েছেন, কাল অন্য সাধারণ মানুষও একই বিপদে পড়তে পারেন। তাই অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করে কড়া শাস্তি দিতে হবে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এদিকে ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।