দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরাম থানার কৃষ্ণকুমার বর্মন নামের এক পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে আটকে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে তাঁর উপর অনেক ধার দেনা জমে গিয়েছে। সেই টাকা না মেটালে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন না। এমন অবস্থায় তিনি ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে সাহায্য চেয়েছেন। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বর্তমানে কৃষ্ণকুমারের পরিবারের বাড়ি পৌঁছানোর জন্য ১৫ হাজার টাকা পাঠানো হচ্ছে বলে খবর।
আরও পড়ুন: বাম শাসিত কেরলে বাঙালি পরিযায়ী তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ, আতঙ্কে পরিবার
কৃষ্ণকুমারের অভিযোগ, মাস দুয়েক আগে তিনি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে গুজরাটে কাজের উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন। তারা মিঠি রোড সংলগ্ন একটি প্লাইউড কারখানায় কাজ শুরু করেন। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই তারা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়েন। বাংলাভাষায় কথা বললেই স্থানীয়রা তাঁদের বাংলাদেশি হিসেবে হেনস্তা করছেন। দম্পতি নিয়মিত অপমান এবং অমানবিক আচরণের শিকার হচ্ছেন। কৃষ্ণ জানিয়েছেন, তাঁদের থাকা ও খাওয়ার খরচ বাবদ প্রায় ১০ হাজার টাকা বাকি আছে এবং বাড়ি ফিরতে ট্রেন ভাড়া বাবদ আরও প্রায় ৫ হাজার টাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এখানকার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। বাইরে গেলেই তানদেরা2 বাংলাদেশি বলে অপমান করা হয়। ঠিকাদারও টাকা মেটানো না হলে তাঁদের ছাড়ছে না। কার্যত বন্দি হয়ে পড়েছেন।
অন্যদিকে, হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে ফিরে আসা বালুরঘাটের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের পরিযায়ী শ্রমিক দুলাল সরকার জানান, স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের সামনে বাংলাভাষী শ্রমিকরা এখনও নানা ভাবে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। গুরুগ্রামে থাকাকালীন গাড়ি চালকের কাজ করতেন তিনি। তৃণমূল নেতারা বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন এবং শ্রমিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।
জেলা শ্রম দফতরের ডেপুটি লেবার কমিশনার বলদেব মণ্ডল জানান, ভিন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তাঁদের নিরাপদে বাড়ি ফিরতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।ডিএসপি হেড কোয়ার্টার বিক্রম প্রসাদ বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তায় পুলিশ প্রতিনিয়ত ব্যবস্থা নিচ্ছে। তাঁদের যে কোনও সমস্যা সমাধানে প্রশাসন সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। এই উদ্যোগ শ্রমিকদের দ্রুত বাড়ি ফেরা এবং তাঁদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে, ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষীদের উপর হেনস্তার খবর সামনে আসার পর প্রশাসনের এই পদক্ষেপ আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।