ভিনরাজ্যে লাগাতার হেনস্থার শিকার হচ্ছেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা। বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে অভিযোগ উঠছে। বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য বাংলাদেশি তকমা দিয়ে মারধর, গ্রেফতার এমনকী বাংলাদেশ সীমান্তে পুশব্যাকের মতো ঘটনা ঘটছে। সেই আবহে এবার বাম শাসিত কেরলে সামনে এল আরও ভয়াবহ ঘটনা। অভিযোগ উঠছে, কেরলে কাজ করতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার সন্তোষপুরের এক তরুণী। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ক্ষোভ এবং আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: কসবায় ফের গণধর্ষণ! অভিনয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মডেলকে যৌন নির্যাতন
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর পরিবারের প্রায় ১২-১৩ জন সদস্য কেরলে থাকেন। সেখানেই বিভিন্ন রকমের শ্রমের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রায় ছ’মাস আগে তরুণীও তাঁর দাদু-দিদার সঙ্গে থাকার জন্য কেরলে যান। দেড় মাস আগে একটি শপিং মলে জামাকাপড় গুছিয়ে রাখার কাজ পান তিনি। অভিযোগ, গত পরশু কাজে বেরোনোর পর আর ফেরেননি ওই তরুণী। পরিবারের তরফে নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের হয় ফেরকা থানায়। কিন্তু বুধবার বিকেলে তিনি বাড়ি ফেরেন সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও রক্তাক্ত অবস্থায়। পরিবারের কাছে তরুণী জানান, কাজ থেকে ফেরার পথে কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর নাকে রুমাল চেপে ধরলে তিনি জ্ঞান হারান। পরে জ্ঞান ফেরে এক অচেনা ঘরে, যেখানে প্রায় কুড়িজন লোক ছিল। তরুণীর অভিযোগ, তাঁকে বারবার অজ্ঞান করে গণধর্ষণ করা হয়।
তরুণীর শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার। তাঁদের দাবি, নির্যাতনের পর তরুণীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে অবিলম্বে কেরল ছেড়ে চলে যেতে হবে, না হলে প্রাণে মারার পরিণতি ভোগ করতে হবে। এরই মধ্যে পরিবারের পক্ষ থেকে সিরকা থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পকসো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে, তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই নৃশংস ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন, এখন তাঁরা ভয় পাচ্ছেন কেরলে থাকতে। বাংলার শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠছে এই ঘটনার পর।