আমেরিকায় চোখের চিকিৎসা করিয়ে রবিবার রাতে কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর সোমবার থেকেই লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার অফিসে তল্লাশি শুরু করেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গোয়েন্দারা। যা নিয়ে মঙ্গলবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেখানে লেখা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ছিলেন। ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ওই সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তিনি।
এই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর সরাসরি আক্রমণ করেন অভিষেককে। তিনি টুইট (এখন এক্স) করে লেখেন, ‘আমি একজনের স্মৃতি রোমন্থন করিয়ে দিতে চাই, যিনি বারবার বলেছেন, তিনি স্বেচ্ছায় ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুবরণ করবেন যদি কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে একটা দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে পারে। বাংলার মানুষ এসব চালাকি সহ্য করে না। হেঁটে ফাঁসির মঞ্চে যেতে হবে না। বরং হেঁটে তদন্তকারী সংস্থার দফতরে যান এবং তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করুন। আশা করি এটা যথেষ্ট আপনাকে সবটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য।’
এদিকে ইডি যে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছে সেখানে কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দোষী সাব্যস্ত করেনি। বরং ওই কোম্পানিতে তিনি আগে যুক্ত ছিলেন সে কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোনও কোম্পানিতে আগে যুক্ত থাকলেই একজন ব্যক্তি অপরাধী হয়ে যায় না। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সেখানে শুভেন্দু অধিকারী জোর করে তাঁকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে রোজ অত্যাচার করছে। কাল সারারাত না জানিয়ে হঠাৎ চলে গিয়েছে চার–পাঁচটা জায়গায়। আমাকেও কেউ বলেনি। আমি সকাল ৬টায় জানতে পারলাম আইনজীবী মারফত। ছেলেটা সবে বিদেশ থেকে এসেছে। আর শুনছি বাবুরা বেরিয়ে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: শ্রমিক কল্যাণ আইনের আওতায় কারা? বিধানসভায় নতুন বিল আনছে রাজ্য সরকার
ঠিক কী লিখেছেন অভিষেক? অন্যদিকে এই বিবৃতি এবং শুভেন্দুর আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদও। এক ইঞ্চি জায়গা তিনি ছাড়েননি। তাই পাল্টা তিনি লিখেছেন, ‘আমি আশা করি এই ছবিটা যথেষ্ট আপনাকে সবকিছু মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনি কখন হেঁটে তদন্তকারী সংস্থার কাছে যাচ্ছেন সেটা কি জানতে পারি?’ এই লেখার সঙ্গে নারদ ভিডিয়ো’র ছবি যোগ করেছেন অভিষেক। যেখানে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারী পাঁচ লক্ষ টাকা গুনে নিচ্ছেন। এভাবেই আজ একে অপরের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন।