কলকাতায় একটু ভারী বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। আর সেই দৃশ্য শহরবাসীর কাছে নতুন নয়। তবে এবার সেই পুরনো সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কোমর বেঁধে নেমেছে কলকাতা পুরসভা। বর্ষার আগে থেকেই চিহ্নিত করা হয়েছে এমন ৩৮টি ‘স্পর্শকাতর’ অঞ্চল যেখানে বৃষ্টি নামলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা জল জমে থাকে। এবার বর্ষাকালজুড়ে এই এলাকাগুলিতে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ নজর। মোতায়েন করা হয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অতিরিক্ত কর্মী।
আরও পড়ুন: সাবওয়েতে জল জমে চিন্তা বাড়ছে রেলের, সমাধানে ওয়াচম্যান মোতায়েনের সিদ্ধান্ত
নিকাশি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠনঠনিয়া, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, এক্সাইড মোড়, আশুতোষ মুখার্জি রোড, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট-সহ ৩৮টি এলাকা বাছা হয়েছে, যেগুলিতে বর্ষাকালে জল জমার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকায় চলছে নিয়মিত ম্যানহোল ও গালিপিট পরিষ্কার, ভূগর্ভস্থ নালাগুলির সাকশন করে জল তোলার কাজ। শুধু বর্ষার সময় নয়, বর্ষা আসার আগেই চালু করা হয়েছে বিশেষ ডিউটি রোস্টার। কোথায় কোন আধিকারিক দায়িত্বে থাকবেন, জল কোথা থেকে তুলে কোথায় সরানো হবে সবকিছুই আগে থেকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রতিটি এলাকায় নিযুক্ত করা হয়েছে ‘মোবাইল নিকাশি ইউনিট’, যারা ব্লো-ভ্যাক, জেট কাম সাকশন মেশিন, ম্যানহোল ডিসিল্টিং-এর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে জল নিষ্কাশনের কাজ করছেন।
পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, হঠাৎ ভারী বৃষ্টি হলেও জল দাঁড়ানোর সুযোগ না পায় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনকি বৃষ্টি না হলেও নিকাশিনালা থেকে বাড়তি জল বার করে নেওয়া হচ্ছে যাতে বৃষ্টির সময় সেগুলি আরও বেশি জল ধারণ করতে পারে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিং জানান, বর্ষার মরশুমে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই ৩৮টি এলাকায় ফোকাস করা হচ্ছে। বছরের অন্য সময় এসব যন্ত্রপাতি শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরিয়ে কাজে লাগানো হলেও, এই সময়ে এই স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। জল জমে থাকলেও যত দ্রুত সম্ভব তা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তবে পুর প্রশাসনের মতে, পলি তোলার ফলে ভূগর্ভস্থ নালাগুলির জলধারণ ক্ষমতা বাড়লেও, ভারী বৃষ্টির সময় যদি নদীতে জোয়ার থাকে এবং লকগেট বন্ধ থাকে তাহলে জল জমা এড়ানো কঠিন। তা সত্ত্বেও, পুরসভা নিশ্চিত করতে চাইছে যে যত দ্রুত সম্ভব সেই জল নামানোই এখন তাদের মূল লক্ষ্য।