এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি পর সামনে এল নতুন তথ্য। ইডির দাবি, বিধায়ক হওয়ার বহু আগেই তিনি চাকরি বিক্রির কারবার শুরু করেছিলেন এবং তা এক জেলার গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল অন্তত পাঁচ জেলায়। মুর্শিদাবাদ, মালদা, দুই দিনাজপুর এবং বীরভূমে এই নেটওয়ার্ক বিস্তার লাভ করেছিল। এরজন্য এজেন্টও নিয়োগ করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: গ্রেফতারির পর মুখ খুললেন জীবনকৃষ্ণ, অভিষেকের নিশানায় কারা? BJP বলছে…
ইডি সূত্রে খবর, বড়ঞার বিধায়ক প্রায় ১৫ জন এজেন্টকে কাজে লাগিয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা টাকা সংগ্রহের জন্য। শুধু তাই নয়, এই এজেন্টরা আবার সাব-এজেন্ট নিয়োগ করে ব্যবসা আরও বড় করে তোলেন। সংখ্যায় প্রায় ৫০ জন সাব-এজেন্ট ছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। এভাবেই চাকরি বিক্রির চেইন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন বিধায়ক। এমনটাই দাবি ইডির। কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে আসা নথি অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে জীবনকৃষ্ণ সাহার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। ইডির দাবি, এই টাকাগুলি ছিল চাকরি বিক্রির অঙ্ক। বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর সম্পত্তির বহর আরও বাড়তে থাকে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের মধ্যে একাধিক বেনামি সম্পত্তি কেনা হয়। সেই সম্পত্তিগুলির মালিকানা খতিয়ে দেখতে গিয়ে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ অন্তত ছ’জনের নাম সামনে এসেছে।
জীবনকৃষ্ণের বাবা বিশ্বনাথ সাহা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, ছেলে এমএলএ হওয়ার পরই বিপুল সম্পত্তি গড়ে তুলেছে। ইডি মনে করছে, এই বক্তব্য তদন্তের অন্যতম প্রমাণ হিসেবে উঠে আসতে পারে। এদিকে দ্বিতীয়বারের গ্রেফতারির পর বিধায়কের গাড়ির চালক রাজেশ ঘোষও ইডির স্ক্যানারে। বয়স মাত্র ২৭ হলেও, রাজেশ নাকি জীবনকৃষ্ণের জামিনের পর থেকেই তাঁর আন্দি গ্রামের বাড়ির কার্যত নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিলেন। আর্থিক লেনদেন থেকে শুরু করে বিধায়কের সঙ্গে দেখা করার নিয়ম সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁর হাতে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিধায়কের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত যাবতীয় নথি ও মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে রাজেশের কাছ থেকে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে।